দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অভিবাসন ও আশ্রয়নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে আয়ারল্যান্ড। দেশটির বিচারমন্ত্রী জিম ও’কালাহান জানিয়েছেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় হারের তুলনায় সাত গুণ বেশি হওয়ায় এ পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪ লাখ ৬০ হাজারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২২ সালের পর থেকে নিট অভিবাসন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বছরে গড়ে ৭২ হাজার অভিবাসী দেশটিতে প্রবেশ করেছেন। কর্মসংস্থান ভিসা, পারিবারিক পুনর্মিলন এবং ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা এ বৃদ্ধির বড় কারণ। আশ্রয়ের আবেদনও নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে ১৮ হাজার ৬৫১ জন আশ্রয় চেয়েছেন, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। এর আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ২৭৬।
আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আয়ারল্যান্ডে বিক্ষোভ ও দাঙ্গা হয়েছে। গত মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম ডাবলিনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চাকরিতে নিয়োজিত আশ্রয়প্রার্থীদের রাষ্ট্রীয় আবাসন ব্যয়ের অংশ হিসেবে সাপ্তাহিক আয়ের ১০ থেকে ৪০ শতাংশ দিতে হবে। প্রায় ৭ হাজার ৫০০ জন এ নিয়মের আওতায় আসবেন। পরিবার পুনর্মিলনের ক্ষেত্রেও কঠোরতা আনা হয়েছে। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকাবহির্ভূত দেশ থেকে আত্মীয় আনতে হলে বছরে কমপক্ষে ৪৪ হাজার ইউরো আয় এবং যথাযথ আবাসনের প্রমাণ দিতে হবে।
শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মও কঠোর করা হয়েছে। আগে তিন বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়া যেত, এখন তা বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে সামাজিক কল্যাণ ভাতা নিচ্ছেন, তারা নাগরিকত্বের যোগ্য হবেন না। এছাড়া গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলে আশ্রয়ের মর্যাদা বাতিল করা যাবে।
সরকার জানিয়েছে, কিছু শিক্ষা কর্মসূচি দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের উদ্দেশ্যে অপব্যবহার হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থী ভিসায়ও কড়াকড়ি আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
logo-1-1740906910.png)