যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে নতুন অভিবাসন চুক্তি ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ স্কিমে ইতোমধ্যে শতাধিক অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সময়ে বৈধ পথে আসা কিছু মানুষকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।  

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই চুক্তি অনুযায়ী, যারা ছোট নৌকায় অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে, তাদের ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে। বিনিময়ে বৈধ পথে আসা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যে গ্রীষ্মে এই চুক্তি হয়।  

গত দুই মাসে প্রায় ১১৩ জনকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সময়ে বৈধ পথে ৮৪ জনকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হোম অফিস জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিপজ্জনক নৌযাত্রা নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে বাস্তবে এখনো ৮ হাজারের বেশি মানুষ ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে।  

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ বলেছেন, “যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করছে তারা সময় ও অর্থ নষ্ট করছে। আমরা তাদের ফেরত পাঠাচ্ছি এবং সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর অবস্থান নিচ্ছি”। তিনি আরো জানান, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হচ্ছে।  

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই চুক্তি অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে। অনেকেই দাবি করছেন, ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো অভিবাসীরা মানব পাচারকারীদের হাতে আবারো বিপদের মুখে পড়ছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, ফ্রান্সে ফিরে গিয়ে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে থেকেছেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।  

কিছু অভিবাসী ফেরত পাঠানোর পর আবারো ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। একজন ইরানি নাগরিককে দুইবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, ফ্রান্সে মানব পাচারকারীদের হাতে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।  

সরকার বলছে, এই স্কিম আরো সম্প্রসারণ করা হবে। লক্ষ্য হলো অবৈধ অভিবাসন কমানো এবং বৈধ পথে আসা মানুষদের সুযোগ দেওয়া। তবে সমালোচকরা মনে করেন, এই নীতি সমস্যার মূল কারণ সমাধান করছে না, বরং অভিবাসীদের আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।  

'ওয়ান ইন, ওয়ান আউট' স্কিম যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে নতুন অধ্যায়। সরকার মনে করছে, এটি অবৈধ প্রবেশ কমাবে। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই নীতি অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের জন্য বড় হুমকি।