মাল্টায় উচ্চশিক্ষায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মাল্টার জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (NSO) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশটিতে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৫২ জন, যা মোট ভর্তি শিক্ষার্থীর ৩৭ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এটি ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি।  

তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২১.৯% নন-ইইউ দেশ থেকে এবং ১৫.১% অন্যান্য ইইউ দেশ থেকে এসেছে। সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি দেখা গেছে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে যেখানে ভারতীয় শিক্ষার্থী ছিল ১,০৩৩ জন, সেখানে ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৭৮ জন অর্থাৎ ১৩০ শতাংশ বৃদ্ধি।  

এছাড়া নাইজেরিয়ান শিক্ষার্থী বেড়েছে ৯৭.৩%, ফরাসি শিক্ষার্থী ৪৮.৯% এবং লিবিয়ান শিক্ষার্থী ২৭.১%।  

GEDU-এর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নিয়োগ পরিচালক রাজ কাপুর বলেন, মাল্টা এখন বিশ্বমানের শিক্ষা গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তিনি উল্লেখ করেন, এখানে ইংরেজি ভাষায় উচ্চমানের শিক্ষা দেওয়া হয়, ডিগ্রি ইইউ-স্বীকৃত এবং শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা।  

এই ভিসার মাধ্যমে স্নাতকরা চাকরি পেলে ৯ মাসের মধ্যে তাদের টিউশন ফির ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ফেরত পাওয়া যায়। এছাড়া মাল্টার সাশ্রয়ী খরচ, স্বচ্ছতা এবং শক্তিশালী ক্যারিয়ার সুযোগ শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করছে। GEDU-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের স্নাতকদের ৯৮ শতাংশ স্থানীয়ভাবে চাকরি পেয়েছেন।   

এনএসওর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মাল্টার পোস্ট-সেকেন্ডারি শিক্ষায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮০৮ জন, যা মোট শিক্ষার্থীর ১৭.৪ শতাংশ। এদের মধ্যে চীনা, ফিলিপাইন ও ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।  

ফিলিপাইন শিক্ষার্থী বেড়েছে ৭৪.৪%, চীনা শিক্ষার্থী ৬৮.৫%, আর পোলিশ শিক্ষার্থী বেড়েছে ৫৭.১%।  

এনএসওর এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী, মাল্টার ইংরেজি ভাষা শিক্ষা (ELT) খাতও দ্রুত বাড়ছে। ২০২৪ সালে দেশটির ৩৩টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইএলটি স্কুলে ভর্তি হয়েছে ৮০ হাজার ৯৪৬ জন শিক্ষার্থী, যা আগের বছরের তুলনায় ২ হাজার ৩৭৯ জন বেশি।  

এদের মধ্যে বেশির ভাগ এসেছে ইতালি (২৪.৯%), ফ্রান্স (১০.৩%) এবং জার্মানি (১০.১%) থেকে। মোট শিক্ষার্থীর ৭৩.৯% ইইউ দেশ থেকে এসেছে।  

মাল্টা ছোট একটি ভূমধ্যসাগরীয় দেশ হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষায় বড় প্রভাব ফেলছে। সাশ্রয়ী খরচ, উচ্চমানের শিক্ষা, ইংরেজি ভাষার সুবিধা এবং চাকরির সুযোগ শিক্ষার্থীদের কাছে দেশটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।