গ্রিসে অভিবাসী আটককেন্দ্রে থাকা কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তাকে দ্রুত বহিষ্কার করা হবে- এমন ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী থানোস প্লেভরিস। ১২ নভেম্বর রাতে উত্তর গ্রিসের একটি আটককেন্দ্রে বিক্ষোভ ও দাঙ্গার পর এই নীতি কার্যকর করার কথা জানানো হয়।  

মন্ত্রী প্লেভরিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “যাদের শরণার্থী প্রোফাইল নেই, তাদের জন্য প্রক্রিয়াটি সহজ; দ্রুত আশ্রয় আবেদন যাচাই, প্রত্যাখ্যান এবং বহিষ্কার। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আটক থাকবে।” তিনি আরো বলেন, “অবৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই।”  

গ্রিসের সেরেস অঞ্চলের সিন্তিকির ক্লেইদি এলাকার আটককেন্দ্রে ১২ নভেম্বর রাতে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সেখানে প্রায় ৭৫০ জন অভিবাসী ছিলেন। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দুই পুলিশ আহত হন- একজন পাথরের আঘাতে এবং অন্যজনের হাতে কামড় দিয়ে। এ ঘটনায় ৩০ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দাঙ্গায় জড়িতদের শনাক্ত করা হবে।  

চলতি বছরের গ্রীষ্মে গ্রিস ইউরোপের অন্যতম কঠোর অভিবাসন আইন প্রণয়ন করেছে। নতুন আইনে অনিয়মিত অভিবাসীদের আটক রাখার মেয়াদ সর্বোচ্চ ২৪ মাস করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে প্রবেশ বা অবস্থানের জন্য দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। যাদের আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হয়েছে, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে জেলে যেতে হবে।  

এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ঠিক একদিন পর, যখন গ্রিসের দক্ষিণে গাভদোস উপকূলে অভিবাসীবাহী একটি নৌকাডুবিতে তিনজনের মৃত্যু হয় এবং ৫৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে সুদানের দুই নাগরিককে মানব পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিসে অভিবাসীদের আগমন বেড়েছে।  

ইনফো মাইগ্রেন্টস বলছে, গ্রিসের নতুন নীতি অনুযায়ী, আটককেন্দ্রে অপরাধ করলে অভিবাসীদের দ্রুত বহিষ্কার করা হবে। কঠোর আইন ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলি দেশটির অভিবাসন সংকটকে আরো জটিল করে তুলছে।