ফিনল্যান্ডে অনিয়মিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৯
ইউরোপের অন্যতম মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ফিনল্যান্ড এখন অনিয়মিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। দেশটির নতুন ডানপন্থি সরকার অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে, যার ফলে অনিয়মিতভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো, আশ্রয় প্রত্যাখ্যান এবং সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এতে আতঙ্কে পড়েছেন বাংলাদেশিসহ বহু অভিবাসী।
ফিনল্যান্ডের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। নতুন সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, যারা আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন বা বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হবে।
বিশেষ করে ইরাক, সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ এসব দেশের অনেক নাগরিক রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কারণে ফিনল্যান্ডে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুন নীতির আওতায় তাদের অধিকাংশের আবেদন বাতিল হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা চাই না, আমাদের দেশে কেউ অবৈধভাবে থাকুক। যারা বৈধ নন, তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে”। তিনি আরো জানান, অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরো কঠোর ও নিয়ন্ত্রিত করার লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেক অভিবাসী মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা করছেন। হেলসিঙ্কিভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় মানবিক দিক বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না, ফলে অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশি অভিবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন, তারা ফিনল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন, কর দিচ্ছেন এবং সমাজে অবদান রাখছেন, তবুও নতুন নীতির কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপজুড়ে ডানপন্থি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান এবং অভিবাসনবিরোধী মনোভাবের কারণে অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। ফিনল্যান্ডের এই পদক্ষেপ অন্যান্য স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের কাছে সহানুভূতিশীল ও মানবিক অভিবাসন নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে অনিয়মিত হলেও দীর্ঘদিন বসবাসরত ও সমাজে অবদান রাখা অভিবাসীরা ন্যায্যতা পান।
logo-1-1740906910.png)