পর্তুগালে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা গত সাত বছরে চার গুণ বেড়ে ২০২৪ সালের শেষে প্রায় ১৫ লাখে পৌঁছেছে। দেশটির অভিবাসন, সংহতি ও আশ্রয় সংস্থা AIMA-এর তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন বিদেশি নাগরিক পর্তুগালে নিবন্ধিত ছিলেন।
দ্য পর্তুগাল নিউজের প্রতিবেদনে এই বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অভিবাসন নীতির পরিবর্তন, শ্রমবাজারে বিদেশি শ্রমিকের চাহিদা এবং CPLP (পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশসমূহ) থেকে আগত নাগরিকদের জন্য সহজতর আবাসন সুবিধা। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রায় ২.৪ লাখ নতুন অভিবাসী যুক্ত হয়েছেন।
বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে ব্রাজিলিয়ানরা সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী, মোট জনসংখ্যার ৩১.৪%। এরপর রয়েছে ভারতীয় (৭.৪%), অ্যাঙ্গোলান (৬.৯%) এবং ইউক্রেনীয় (৫.৯%) নাগরিকরা। অভিবাসীদের ৭৭% কর্মক্ষম বয়সের মধ্যে (১৮-৪৪ বছর), যার মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৫৬.১%।
পর্তুগালের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে অভিবাসীদের বসবাস বেশি, বিশেষ করে লিসবন, ফারো, সেতুবাল ও পোর্তো জেলায়। এই চার জেলায় মোট বিদেশি জনসংখ্যার ৭১.৩% বসবাস করে।
AIMA-এর ‘Mission Structure for Recovering Pending Cases’ প্রকল্পের আওতায় ২.৮ লাখের বেশি নাগরিকের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। CPLP আবাসন সুবিধা, দীর্ঘমেয়াদি ভিসা এবং অস্থায়ী সুরক্ষা সুবিধা পেয়েছেন আরো হাজার হাজার অভিবাসী।
২০২৪ সালে ২ লাখ ১৮ হাজার ৩৩২টি রেসিডেন্স পারমিট ইস্যু করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩৪% কম। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আগের বছর CPLP ভিসা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রূপান্তরিত হওয়ায় নতুন আবেদন কমে গেছে।
২০২৪ সালে পর্তুগাল ২ হাজার ৬৭৭টি আন্তর্জাতিক সুরক্ষা আবেদন গ্রহণ করেছে, যার ৫৮.২% আফ্রিকান দেশ থেকে। এছাড়া সোমালিয়া, গিনি-কনাক্রি, লিবিয়া, ইথিওপিয়া ও আফগানিস্তান থেকে আগত ১৯৮ জনকে মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১৫১.৯% বেড়ে ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে, যাদের অধিকাংশ গাম্বিয়া থেকে এসেছে।
এই পরিসংখ্যান পর্তুগালের অভিবাসন ব্যবস্থার গতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক মানবিক দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। অভিবাসীদের জন্য পর্তুগাল এখন শুধু একটি কর্মস্থল নয়, বরং নিরাপদ আশ্রয় ও নতুন জীবনের সম্ভাবনার দেশ।
logo-1-1740906910.png)