ডেনমার্কে পড়াশোনার নামে চাকরি; বিপাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১১
ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা চরম সংকটে পড়েছেন। আর এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে বাংলাদেশিদেরই একাংশের অনিয়ম ও অপব্যবহার। শিক্ষার্থী ভিসার অপব্যবহার, পড়াশোনায় অনাগ্রহ, অতিরিক্ত কাজ এবং পরিবার নিয়ে বসবাসের প্রবণতা নিয়ে দেশটির সংসদ, গণমাধ্যম ও রাজপথে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, কিছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার চেয়ে কাজকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। অনেকেই ডেনমার্কের কঠিন শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। ফলে ড্রপ আউটের হার বেড়েছে, একাডেমিক ফলাফলও দুর্বল। বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সারির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছেন, তাদের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ডেনমার্কের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২-২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৩% ড্রপ আউট, ১৪-২৫% পরীক্ষায় অনুপস্থিতি এবং মাত্র ৫৫-৬৫% পাসের হার রয়েছে। অন্যদিকে অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের পাসের হার প্রায় ৯০%।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ৫৮% এবং নেপালি শিক্ষার্থীদের ৭৪% পরিবারসহ বসবাস করছেন, যেখানে চীনা ও আমেরিকান শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১-২%। এতে শিক্ষার্থী ভিসার অপব্যবহারের অভিযোগ জোরালো হয়েছে।
বিশেষভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশি এডুকেশন কনসালটেন্সি ফার্মগুলোকে, যারা বিপুল অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের ভুল তথ্য দিয়ে ডেনমার্কে পাঠাচ্ছে। আলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও কোপেনহেগেন বিজনেস স্কুল জানিয়েছে, এসব এজেন্ট সরাসরি নয় বরং শিক্ষার্থীদের হয়ে আবেদন করে, যা অনিয়মের জন্ম দেয়।
এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাচ্ছে ডেনমার্কের অভিবাসনবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তারা সংসদ ও রাজপথে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ইস্যু সামনে এনে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে রসকিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
১৮ সেপ্টেম্বর ডেনমার্কের অভিবাসন মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে আগত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কঠোরভাবে যাচাই করা হবে এবং পড়াশোনা শেষ না করে চাকরির বাজারে প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর.কম
logo-1-1740906910.png)