
পর্তুগালের সংসদে অভিবাসন-সংক্রান্ত নতুন আইন পাস হয়েছে, যা দেশটিতে বসবাসরত ও নতুন করে অভিবাসনপ্রত্যাশী বিদেশিদের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনে এই আইনটি পাস হয়, যা অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নতুন আইনের আওতায়, পর্তুগালে বৈধভাবে বসবাস করতে হলে এখন আরো কঠিন শর্ত পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে যারা কাজের খোঁজে দেশটিতে আসেন, তাদের জন্য নিয়মকানুন আরো জটিল করা হয়েছে। আগে যেসব অভিবাসী ‘কাজের খোঁজে’ ভিসা ছাড়া প্রবেশ করে পরে বৈধতা পেতেন, এখন সেই সুযোগ সীমিত করা হয়েছে।
আইনটি পাস হওয়ার পরপরই পর্তুগালের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরো ‘নিয়ন্ত্রিত ও কার্যকর’ করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই আইন অভিবাসীদের অধিকার সংকুচিত করবে এবং অনেকেই বৈধতা পাওয়ার সুযোগ হারাবেন।
নতুন আইনে আরো বলা হয়েছে, যারা পর্তুগালে কাজ করতে চান, তাদের আগে থেকেই নিয়োগদাতা ও কাজের চুক্তি থাকতে হবে। এছাড়া, অভিবাসন-সংক্রান্ত আবেদন প্রক্রিয়ায় সময়সীমা ও যাচাই-বাছাইয়ের ধাপ বাড়ানো হয়েছে। এতে করে যারা ইতোমধ্যে পর্তুগালে অবস্থান করছেন, তাদের বৈধতা পাওয়ার প্রক্রিয়া আরো দীর্ঘ ও কঠিন হয়ে উঠবে।
পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী এবং ডানপন্থি দলগুলোর নেতারা বলছেন, এই আইন দেশের নিরাপত্তা ও শ্রমবাজার রক্ষায় সহায়ক হবে। তবে বিরোধী দল ও অভিবাসন অধিকারকর্মীরা বলছেন, এটি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যাজনক এবং অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণকে উৎসাহিত করতে পারে।
পর্তুগালে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখের বেশি বিদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা থেকে এসেছেন। নতুন আইনটি কার্যকর হলে এসব অভিবাসীর জীবনযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই আইন অভিবাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে পারে, তবে মানবিক ও সামাজিক দিক বিবেচনায় আরো পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তথ্যসূত্র: পর্তুগাল রেসিডেন্স ডট কম