
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ২৬ সেপ্টেম্বর এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে দেশব্যাপী বাধ্যতামূলক ডিজিটাল আইডি স্কিম চালুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এই পরিকল্পনা লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল না, সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে চাপের মুখে সরকার এ বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
ক্যাবিনেট অফিস মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন জানান, ডিজিটাল আইডি ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারি সেবায় প্রবেশ আরো সহজ হবে। তিনি সম্প্রতি এস্তোনিয়া সফরে গিয়ে দেখেছেন, সেখানে ডিজিটাল আইডি ব্যবহার করে নাগরিকরা চিকিৎসা, ভোটদান ও ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছেন।
তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে বিরোধী দলগুলো সমালোচনা করেছে। কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাদেনক বলেন, “এটি একটি গুরুতর পদক্ষেপ, যা জাতীয় পর্যায়ে বিতর্কের দাবি রাখে।" তিনি এটিকে 'নেতৃত্ব সংকট থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য মরিয়া কৌশল' বলে অভিহিত করেন।
রিফর্ম ইউকে দল এই পরিকল্পনাকে 'ভোটারদের বিভ্রান্ত করার কৌশল' বলে আখ্যা দিয়েছে। তাদের মতে, “যারা ইতোমধ্যে অভিবাসন আইন ভঙ্গ করছেন, তারা হঠাৎ করে ডিজিটাল আইডি মেনে নেবেন- এটা হাস্যকর”।
লিবারেল ডেমোক্র্যাট দল বলেছে, তারা বাধ্যতামূলক ডিজিটাল আইডি স্কিম সমর্থন করতে পারে না। প্রযুক্তি বিষয়ক মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া কলিন্স বলেন, “যারা ডিজিটাল আইডি রাখতে পারবেন না বা রাখতে চান না, তাদের অপরাধী বানানো উচিত নয়”।
প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিনও এই স্কিমের বিরোধিতা করে বলেছেন, এটি নাগরিক স্বাধীনতার ওপর আঘাত।
এদিকে, স্টারমার তার ভাষণে অভিবাসন ইস্যুতে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “অনেক বছর ধরে আমাদের দেশে আসা, ছায়া অর্থনীতিতে ঢুকে পড়া এবং অবৈধভাবে থাকা খুব সহজ ছিল। প্রতিটি জাতিরই তার সীমান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত।"
তিনি আরো বলেন, “অবৈধ শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে ন্যায্য মজুরি কমিয়ে দেওয়া কোনো সহানুভূতিশীল বামপন্থা নয়”। ডিজিটাল আইডি স্কিমকে তিনি এই সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে তুলে ধরেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি