ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ, কঠোর হচ্ছে ভিসার শর্ত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৮

গত কয়েক বছরে ডেনমার্কে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। তবে দেশটির শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারা, খারাপ ফলাফল এবং ড্রপআউটের উচ্চ হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডেনমার্কের শিক্ষা ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়। আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত এক জরিপে উঠে এসেছে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পারফরম্যান্স অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে।
বিশেষ করে আরহাস বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৩ শতাংশ, যেখানে অন্যান্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তা মাত্র ৪ শতাংশ। পরীক্ষায় অনুপস্থিতির হার, পাসের হার এবং সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশিরা পিছিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, মাত্র ৩ শতাংশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জন করতে পেরেছেন।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে অটোপাস, সিলেবাস সংকোচন, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি কাটাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, ফলে বিদেশে গিয়ে তারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন”।
আলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা গ্রুপ ওয়ার্ক এবং পরীক্ষার পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্ক ও কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ও একই চিত্র তুলে ধরেছে।
জরিপে উঠে এসেছে, অনেক শিক্ষার্থী আসছেন মূলত স্থায়ী হওয়ার উদ্দেশ্যে, তাই পড়াশোনায় মনোযোগ কম। কিছু এজেন্ট প্রকৃত শিক্ষার্থী না হয়েও শিক্ষাভিসায় পাঠাচ্ছে লোকজন। এতে প্রকৃত শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জাহিদুল ইসলাম নামে আলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দক্ষ শিক্ষকের অভাব, আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। ফলে বিদেশে গিয়ে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়”।
ডেনমার্কের শিক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনা এগেলন্ড জানিয়েছেন, কর্মজীবী স্বামী/স্ত্রী আনা, ভর্তির শর্ত এবং খরচ সংক্রান্ত নিয়ম কঠোর করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. তানজীম উদ্দিন খান বলেন, “শিক্ষায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত সংস্কার জরুরি। নিয়োগে স্বচ্ছতা না আনলে শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
তথ্যসূত্র: দৈনিক বণিক বার্তা