Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবাসন সংকট

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩

জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবাসন সংকট

জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আবাসন সংকট দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। দেশটির সামগ্রিক আবাসন বাজারে যে সংকট চলছে, তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে নিম্ন আয়ের অভিবাসীদের ওপর; বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমজীবী ও শিক্ষার্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে।

জার্মানির ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর বিল্ডিং রিসার্চের (BBSR) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশটিতে বছরে অন্তত ৩ লাখ ২০ হাজার নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণের প্রয়োজন ছিল, অথচ ২০২৪ সালে অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ছিল মাত্র ২ লাখ ১৬ হাজার, যা ২০১০ সালের পর সর্বনিম্ন।

এই ঘাটতির ফলে বড় শহরগুলো, যেমন- বার্লিন, মিউনিখ, হামবুর্গ ও ফ্রাঙ্কফুর্টে ভাড়ার হার বেড়েছে এবং নতুন প্রকল্প স্থগিত হয়েছে। বার্লিনে একটি সাধারণ ভাড়ার বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ জন আবেদনকারী ভিড় করছেন।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরো জটিল। অধিকাংশই শিক্ষার্থী, রেস্টুরেন্ট কর্মী, নির্মাণ শ্রমিক বা ডেলিভারি সার্ভিসে যুক্ত। এদের অনেকেই জার্মান ভাষায় দুর্বল, স্থানীয় নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অজ্ঞ এবং আবাসন চুক্তির জটিলতায় পড়েন। ফলে তারা প্রায়ই অতিমূল্যায়িত, নিম্নমানের বাসস্থানে থাকতে বাধ্য হন।

জার্মানির নতুন আবাসনমন্ত্রী ভেরেনা হুবার্টজ এই সংকটকে “সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ইস্যু” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ‘বাউ-টার্বো’ নামে একটি নতুন আইন প্রস্তাব করেছেন, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত আবাসন প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষমতা দেবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইন বাস্তবায়ন হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সংকটের সমাধান হবে না। ডয়চে ব্যাংক রিসার্চের অর্থনীতিবিদ জোচেন মোবার্ট মনে করেন, “মুল্যবৃদ্ধি, উচ্চ সুদের হার এবং নির্মাণ খরচ বৃদ্ধির ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে”।

বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা বলছেন, অনেক প্রবাসী পরিবার ৪০ শতাংশের বেশি আয় শুধু ভাড়ায় ব্যয় করছেন, যা OECD-এর ‘আবাসন-ঝুঁকিপূর্ণ’ শ্রেণিতে পড়ে।

এছাড়া সামাজিক আবাসনের ঘাটতি, এয়ারবিএনবির মতো ছুটির বাসস্থান বৃদ্ধির প্রবণতা এবং অভিবাসন বৃদ্ধির ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে।

জার্মানিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এই পরিস্থিতি শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক নিরাপত্তার দিক থেকেও উদ্বেগজনক। বিশেষ করে নতুন শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী আবাসন নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

এই সংকটের সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবনযাত্রা আরো কঠিন হয়ে উঠবে- এমনটিই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে


Logo