
ফ্রান্সের কৃষি খাতের প্রাণভোমরা হয়ে উঠেছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। ফল চাষ, আঙ্গুর সংগ্রহ, পশুপালন কিংবা মৌচাষ; প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিবাসীদের শ্রম ছাড়া উৎপাদন কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ এই শ্রমিকদের অধিকাংশই অনিয়মিত, যাদের নেই বৈধ কাগজপত্র কিংবা স্থায়ী বাসস্থান।
বিশেষ করে মৌসুমি কৃষিকাজে অভিবাসীদের উপস্থিতি এখন অপরিহার্য। দক্ষিণ ফ্রান্সের বিভিন্ন খামারে মরক্কো, আলজেরিয়া, গিনি, বাংলাদেশসহ নানা দেশের শ্রমিকরা দিনভর কাজ করছেন, অথচ তাদের অধিকাংশই সামাজিক নিরাপত্তা বা শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত।
অনেক অভিবাসী শ্রমিকই জানান, তারা প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা কাজ করলেও ন্যায্য মজুরি পান না। কেউ কেউ মৌসুমি চুক্তিতে কাজ করলেও অধিকাংশই কাজ করেন ‘কালো শ্রমিক’ হিসেবে, যার কোনো লিখিত চুক্তি নেই। ফলে তারা স্বাস্থ্যসেবা, অবসর সুবিধা বা দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত থাকেন।
ফ্রান্সে বৈধভাবে কাজ করতে হলে অভিবাসীদের থাকতে হয় বৈধ ভিসা ও কাজের অনুমতিপত্র। কিন্তু অনেকেই যুদ্ধ, দারিদ্র্য বা রাজনৈতিক নিপীড়নের কারণে পালিয়ে এসে অনিয়মিতভাবে বসবাস করছেন। তাদের জন্য কাজ পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনি আইনি জটিলতায় পড়ার আশঙ্কাও বেশি।
তবু খামার মালিকরা জানেন, এই শ্রমিকদের ছাড়া উৎপাদন থেমে যাবে। তাই অনেক সময় তারা ‘চোখ বন্ধ করে’ শ্রমিক নিয়োগ করেন, যদিও এতে আইনি ঝুঁকি থাকে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ফ্রান্সের কৃষি খাতে অভিবাসীদের অবদান স্বীকৃতি পাওয়ার সময় এসেছে। তাদের বৈধতা, শ্রম অধিকার এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু উৎপাদনের জন্য নয়, মানবিক মর্যাদার জন্যও এই পরিবর্তন জরুরি।
তথ্যসূত্র: ইনফো মাইগ্র্যান্টস