
ইউরোপে অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান ঢল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। স্কটল্যান্ডে এয়ার ফোর্স ওয়ান থেকে নামার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এই অভিবাসন ইউরোপকে শেষ করে দিচ্ছে। আপনাদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইউরোপজুড়ে অভিবাসন নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে। জাতিসংঘের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, ইউরোপে আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৭০ লাখের বেশি।
ট্রাম্প বলেন, “অনেক ইউরোপীয় নেতা অভিবাসন ঠেকাতে চেষ্টা করছেন, কিন্তু তারা যথাযথ সম্মান পাচ্ছেন না। আমি চাইলে তাদের নাম নিতে পারি, কিন্তু অন্যদের বিব্রত করতে চাই না”। তিনি অভিবাসনকে “ভয়াবহ আগ্রাসন” বলে অভিহিত করেন এবং ইউরোপের দেশগুলোকে “হুঁশে আসার” আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের বাবা ফ্রেড ও মা মেরি অ্যান ম্যাকলাউড উভয়েই ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয়ে এসেছিলেন। তবু তিনি অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছেন। স্কটল্যান্ড সফরে তিনি বলেন, “গত মাসে আমাদের দেশে কেউ ঢুকতে পারেনি। আমরা অনেক বাজে লোককে সরিয়ে দিয়েছি”।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ‘অভিবাসী ফেরত অভিযান’ পরিচালনা করবেন। ইতোমধ্যে হাজার হাজার অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হয়েছে।
ট্রাম্পের ইউরোপ সফর ঘিরে রয়েছে কূটনৈতিক ও ব্যক্তিগত কর্মসূচি। তিনি স্কটল্যান্ডে নিজের দুটি গলফ স্থাপনায় যাবেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন দার লায়েনের সঙ্গে বৈঠক করবেন1। এছাড়া তিনি স্কটিশ নেতা জন সুইনির সঙ্গেও দেখা করতে পারেন, যিনি ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের মন্তব্য ইউরোপে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু ডানপন্থি নেতা তার বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন, আবার অনেকে একে “বিভাজনমূলক ও উসকানিমূলক” বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা “সুষম ও মানবিক অভিবাসন নীতিতে” বিশ্বাসী।
তথ্যসূত্র: স্কাই নিউজ