Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

জার্মানদের তুলনায় কম আয় অভিবাসীদের

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৭

জার্মানদের তুলনায় কম আয় অভিবাসীদের

জার্মানিতে নতুন জীবন শুরু করা অভিবাসীরা স্থানীয়দের অর্থাৎ জার্মানদের তুলনায় অনেক কম আয় করেন৷ গবেষকরা বলছেন, এই আয়বৈষম্য মূলত উচ্চ মজুরির কাজে অসম সুযোগের কারণে তৈরি হয়৷ আর তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলছে৷

গবেষকরা বলছেন, একই কাজের জন্য অসম মজুরি দেওয়া হয় না অভিবাসীদের৷ কিন্তু তারপরও এত বড় পার্থক্যের তিন-চতুর্থাংশ তৈরি হয়েছে উচ্চ মজুরির শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে না পারা, উচ্চ পদে কাজ না পাওয়া এবং অভিবাসীদের জন্য সুযোগ কম থাকার কারণে৷

জার্মানির ন্যুরেমব্যর্গের জার্মানি'স ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের (আইএবি) করা গবেষণাটি ‘নেচার' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে৷ এতে দেখা গেছে, জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীরা স্থানীয় জার্মান কর্মীদের তুলনায় অন্তত ২০ শতাংশ কম আয় করেন৷

গবেষকরা বলেছেন, একই কাজের জন্য বিদেশে জন্ম নেওয়া বা অভিবাসী কর্মীদের অন্যায্যভাবে বেতন দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা৷ আর তাতেই তৈরি হয়েছে এই আয়বৈষম্য৷

কী রয়েছে এই সমীক্ষায়?

জার্মানিতে প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের সঙ্গে জার্মানদের মজুরি বৈষম্য ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ৷ গবেষকরা বলছেন, একই কাজের জন্য অসম মজুরি দেওয়া হয় না অভিবাসীদের৷ কিন্তু তারপরও এত বড় পার্থক্যের তিন-চতুর্থাংশ তৈরি হয়েছে উন্নত মজুরির শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে না পারা, উচ্চ পদে কাজ না পাওয়া এবং অভিবাসীদের জন্য সুযোগ কম থাকার কারণে৷

গবেষণায় আটটি পশ্চিমা দেশের সঙ্গে জার্মানির অবস্থানকে তুলনা করা হয়েছে৷ পশ্চিমা দেশগুলো হলো: কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ এসব দেশগুলোর সবকটিতে অভিবাসী এবং স্থানীয়দের মধ্যে আয়বৈষম্য রয়েছে৷

তবে, অন্য দেশগুলোর তুলনায় সুইডেন এবং কানাডার মতো দেশগুলো দ্রুত সময়ে এই বৈষম্য অনেকটা দূর করতে পেরেছে৷ বিশেষ করে, অভিবাসীদের দ্বিতীয় প্রজন্মে এসে আয়বৈষম্যের ফারাক অনেকটা কমে এসেছে৷

জার্মানিতে দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও মজুরি বৈষম্য এখনো গড়ে সাড়ে সাত শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক গড় পাঁচ দশমিক ৭ শতাংশের চেয়েও বেশি৷

গবেষণাটি বলছে, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অভিবাসীদের পরবর্তী প্রজন্ম এখনো সুবিধাবঞ্চিত রয়ে গেছেন৷ গবষেণার সহ-লেখক মাল্টে রাইশেল্ট বলেছেন, জার্মান সমাজে ‘‘সফলভাবে অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়েই মূলত উচ্চ মজুরির চাকরিতে যোগ দেওয়ার বাধা ভেঙে ফেলা সম্ভব”।

এই বৈষম্য কমাতে কয়েকটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন গবেষকরা৷ এগুলো হলো- ভাষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা, বিদেশের শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি, পেশাদার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং তথ্য ভাগাভাগি করা৷

প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মজুরি বৈষম্য দেখা যায় ইউরোপের দেশ স্পেনে৷ এখানে বৈষম্য ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ৷ দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা কানাডায় এই পার্থক্য ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ৷ তৃতীয় অবস্থানে থাকা নরওয়েতে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ,  চতুর্থ স্থানে থাকা জার্মানিতে বৈষম্যের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ ও পঞ্চম স্থানে থাকা ফ্রান্সে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক এবং সুইডেনে এই বৈষম্য তুলনামূলক কম৷

দ্বিতীয় প্রজন্মে এসে কানাডায় এই ফারাক অনেকটাই কমে গেছে৷ এ ক্ষেত্রে অভিবাসীদের সঙ্গে স্থানীয়দের মজুরি বৈষম্য মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ৷ আর নরওয়েতে এখনো সেই পার্থক্য ৮ দশমিক ৭ ভাগ৷

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে

Logo