
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য সম্প্রতি একটি “ওয়ান ইন, ওয়ান আউট” অভিবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় আসা অভিবাসীদের সংখ্যা কমানো। এই চুক্তি ঘোষিত হয় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের শেষ দিনে, যেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে ছোট নৌকায় আগত অভিবাসীদের ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে এবং এর বিনিময়ে যুক্তরাজ্য ফ্রান্স থেকে সমসংখ্যক বৈধ আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করবে, যাদের ব্রিটিশ পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
স্টারমার বলেন, “এই চুক্তি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যারা বিপজ্জনক যাত্রা করে আসতে চায়, তারা এখন জানবে- এই পথ ব্যর্থতায় ভরা।” তিনি আরো জানান, চুক্তিটি প্রথমে পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু হবে এবং সফল হলে পরবর্তী পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবে।
তবে চুক্তির বাস্তবায়নে আইনি পর্যালোচনা ও ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় প্রয়োজন, যা বাস্তবায়ন বিলম্বিত করতে পারে। ইউরোপীয় কমিশন ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা চুক্তির আইনি সামঞ্জস্যতা পর্যালোচনা করছে।
এই চুক্তি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাজ্যে অভিবাসন ইস্যুতে জনমত বিভক্ত এবং রিফর্ম ইউকে মতো উগ্র ডানপন্থি দল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২% বেশি।
চুক্তির পাশাপাশি দুই নেতা ইউক্রেনকে সহায়তা, পারমাণবিক সহযোগিতা ও গাজা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান, যা তিনি “শান্তির একমাত্র পথ” বলে অভিহিত করেন।
এই চুক্তি যুক্তরাজ্য-ইইউ সম্পর্কের পুনর্গঠনের অংশ, যেখানে ব্রেক্সিট-পরবর্তী উত্তেজনা ও সীমান্ত সংকট মোকাবিলায় দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে