
ডেনমার্ক আগামী ১ জুলাই থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) ঘূর্ণায়মান সভাপতিত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশটি ইইউজুড়ে আরও কঠোর অভিবাসন নীতি চালুর জন্য চাপ প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে। ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এবং ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রী মারি বিয়েরে ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
কী বলছে ডেনমার্ক?
মারি বিয়েরে বলেন, “অভিবাসন নীতি এখন আর শুধু মানবিক ইস্যু নয়, বরং ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।” তিনি জানান, ডেনমার্ক চায়—
- শরনার্থী প্রক্রিয়া ইউরোপের বাইরে স্থানান্তর করা হোক
- ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের রায় সীমিত করা হোক
- যারা থাকার যোগ্যতা রাখে না, তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হোক
ডেনমার্কের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা
১৯৮৫ সালে যেখানে ডেনমার্কে বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩.৩%, ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬.৩%। সরকার বলছে, এই প্রবণতা দেশের কল্যাণ রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, তাই অভিবাসন সীমিত করা জরুরি।
তবে একই সঙ্গে বিদেশি শ্রমিকের চাহিদাও বেড়েছে, গত এক দশকে কাজের অনুমতির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। যদিও এই অনুমতিগুলো সহজেই বাতিল করা যায়।
“শূন্য শরণার্থী” নীতির দিকে?
প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন অভিবাসনকে বারবার “ডেনমার্কের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি চান—
- অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়া হোক, স্থায়ী নয়
- শরণার্থীদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হোক
- ইইউ পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ সমাধানের পরিবর্তে বহির্বিশ্বে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হোক
ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ ইতোমধ্যেই ডেনিশ মডেলকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইতালি, পোল্যান্ড ও জার্মানির নতুন নেতৃত্বও অভিবাসন বিষয়ে আরো কঠোর অবস্থান নিচ্ছে, যা ডেনমার্কের কৌশলকে ইইউ পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা দিচ্ছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই নীতিগুলো অভিবাসীদের মানবিক মর্যাদা ও আইনি অধিকারকে খর্ব করতে পারে। বিশেষ করে “অস্থায়ী সুরক্ষা” ও “ফেরত নীতির” ওপর অতিরিক্ত জোর সমন্বিত সমাজ গঠনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তথ্যসূত্র: ফ্রান্স ২৪