২০২২ সালের অক্টোবরে চালুর পর থেকে পর্তুগালে জব সিকার ভিসা হচ্ছে সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে সহজ। এটি সম্ভাব্য আবেদনকারীদের প্রথমে ১২০ দিন (৪ মাস) এবং প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত ৬০ দিন (২ মাস) মেয়াদি বৈধতা থাকে। এ ভিসায় একজন অভিবাসনপ্রত্যাশী পর্তুগালে প্রবেশের অনুমতি পায় এবং চাকরি পেয়ে গেলে ভিসা স্ট্যাটাস পরিবর্তন করে স্থায়ী বসবাসের ভিসার জন্য আবেদন করে। 

প্রথম ধাপে আবেদনকারী IEFP-তে সম্মতিপত্র (Expression of Interest) জমা দেন। কাজের আগ্রহ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবরণ দিতে হয়। এর পর সম্পর্কিত পর্তুগিজ কনস্যুলেটে ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার মাধ্যমে ৪ মাস মেয়াদি স্ট্যাম্প প্রাপ্ত হন। যদি চাকরি না পাওয়া যায় এবং আবেদনকারী সেসব নথিপত্র সম্পন্ন করতে পারেন, তবে অতিরিক্ত ৬০ দিনের এক্সটেনশন পাওয়া যায়।

চাকরি পেলে প্রার্থী সাথে সাথেই স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারেন, যা দুই বছর মেয়াদি এবং ত্রৈমাসিক মেয়াদে নবায়নযোগ্য।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও আর্থিক প্রমাণ

ভিসার জন্য আবেদন করার সময় নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই পূরণ করতে হয়:

পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান, সাধারণভাবে পর্তুগিজ ন্যূনতম বেতনের প্রায় তিন গুণ (২,২৮০-২,৩০০ ইউরো) ব্যাংক ব্যালান্সের প্রমাণ।

যাত্রা বীমা (কমপক্ষে ৩০ হাজার কাভারেজ), অপরাধ মুক্তির সার্টিফিকেট, ফেরত যাওয়ার টিকিট বা অর্থের প্রমাণ এবং IEFP-র প্রকাশিত ইচ্ছাপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পাসপোর্ট অন্তত আবেদন ও উত্তরণের তারিখ পেরিয়ে তিন মাস মেয়াদি থাকতে হবে।

প্রক্রিয়ার সময়সীমা ও কার্যকারিতা

আবেদন প্রক্রিয়ার গড় সময় ৩০-৯০ দিন, যদিও ভিসা পরিষদ ও নথিপত্রের নির্ভুলতার ওপর ভিত্তি করে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।

একই সময়ে প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে অনেকে উল্লেখ করেছেন প্রবেশপত্র ও residence appointment–এর ক্ষেত্রে বিলম্ব দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে SEF থেকে AIMA বেড়ে যাওয়ার ফলে ২০২৩-২৪ সময়ে বিলম্ব হয়।

একবার আবেদন সংগ্রহীত হয়ে গেলে আবেদনকারীর দেশের পর্তুগিজ দূতাবাস বা VFS কেন্দ্র ওই সময়টিতে ইন্টারভিউ ও বায়োমেট্রিক নেয়। থাকে না prior job offer-এর বাধ্যবাধকতা।

ভিসার সুবিধা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

- এই ভিসাটি সম্ভাব্য কাজ খুঁজতে ভারতে বসে থাকা প্রার্থীদের ইউরোপ প্রবেশ ও চাকরি সুরক্ষা দেয়। পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, সুলভ খরচ, নিরাপদ পরিবেশ- এসব সুবিধা আকর্ষণীয় করে তোলে।

- চাকরি পেলে residence permit-এ রূপান্তর সম্ভব এবং পরবর্তী সময়ে স্থায়ী বসবাস ও নাগরিকত্বের পথ সুগম। 

- মূলত বয়সের শর্ত না থাকা, prior job offer না ছাড়ার প্রক্রিয়াটি আরো কার্যকর করে তোলে। 

সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা

যদিও সহজে প্রবেশযোগ্য, এ ভিসায় কাজের প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। বিশেষ করে Lisbon বা Porto–র মতো বড় শহরে চাকরি বাজারে entry-level-এর জন্য প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।

অতিরিক্ত সময় পেতে হলে নিশ্চিতভাবে IEFP ও ভিসার নথিপত্র সম্পূর্ণ রাখতে হয়; ভুল বা অসম্পূর্ণ ডকুমেন্ট পুনরায় অপেক্ষার কারণ হতে পারে।

পর্তুগালের জব সিকার ভিসা non‑EU নাগরিকদের জন্য ইউরোপে পা রাখার একটি ভালো রাস্তা। এটি চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত কাজ খোঁজার সুযোগ দেয় এবং চাকরি পেলে residence permit-এ পরিবর্তন করে স্থায়ী বসবাসের পথ তৈরি করে দেয়। তবে আবেদনপত্রের যথার্থতা, পরিকল্পিত job search এবং প্রশাসনিক বিলম্ব নিরসনের প্রস্তুতির পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক বাজার বিবেচনায় আবেদন করাই নিরাপদ।

তথ্যসূত্র: kekou.com.au