আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া অবৈধ; জার্মানির আদালতের রায়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৫, ০৯:১২

জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস গত মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর অনিয়মিত অভিবাসনরোধে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করার নির্দেশনা দেন এবং কেউ সীমান্তে আশ্রয়ের আবেদন করলেও তাকে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন৷
জার্মান সরকারের নতুন অভিবাসন নীতিকে চ্যালেঞ্জ করেছে এই রায়। তবে সরকার জানিয়েছে, সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো অব্যাহত থাকবে৷
বার্লিনের প্রশাসনিক আদালত জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাবলিন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো অবৈধ৷
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের জন্য এটা এক ধাক্কা। কারণ, তিনি অভিবাসনের উপর বিধিনিষেধ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন৷ গত মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি অনিয়মিত অভিবাসনরোধে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করার নির্দেশনা দেন এবং কেউ সীমান্তে আশ্রয়ের আবেদন করলেও তাকে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন৷
আদালতের রায় কী বলছে?
জার্মানির সঙ্গে পোল্যান্ডের এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই রায় দেন৷ নতুন অভিবাসন নীতির আওতায় গত ৯ মে তিন সোমালি নাগরিককে পোল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির সীমান্তে আটকে দেয়া হয় এবং তাদের পোল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়৷
আদালত বলেছেন, এভাবে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং আশ্রয়ের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷
জার্মান ভূখণ্ডের কোনো সীমান্ত চৌকিতে যারা আশ্রয়ের আবেদন করেন, তাদের ডাবলিন পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের আশ্রয়ের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব কোন দেশের, তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ‘‘ফেরত পাঠানোর নিয়ম নেই'' বলে জানিয়েছেন জার্মান আদালত৷
আলোচিত তিন ব্যক্তি, যাদের দুইজন পুরুষ এবং একজন নারী, গত ৯ মে পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে জার্মানিতে পৌঁছেছিলেন৷
জার্মানির কেন্দ্রীয় পুলিশ তাদের ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের ফ্রাঙ্কফুর্ট আন ডেয়ার ওডর রেলওয়ে স্টেশনে থামিয়ে দেন৷
সেই তিন ব্যক্তি জানিয়েছেন, তারা জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করতে চান৷ কিন্তু সেদিনই তাদের পোল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়৷ পুলিশ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, তারা একটি তৃতীয় ‘নিরাপদ দেশ' থেকে এসেছিলেন৷
আদালত অবশ্য এই রায়ও দিয়েছেন যে ‘‘আশ্রয়প্রার্থী জার্মানির ভেতরে প্রবেশের দাবি করতে পারেন না'' এবং ডাবলিন আশ্রয় পদ্ধতি ‘‘সীমান্তে বা সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাতেও প্রয়োগ করা যাবে৷''
সরকার কীভাবে সাড়া দিয়েছে?
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ডট নতুন অভিবাসী নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন৷ তিনি সোমবার জানিয়েছেন, আদালতের রায়টি সুনির্দিষ্ট একটি মামলার জন্য প্রযোজ্য এবং তার সরকার নতুন অভিবাসন নীতির প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে৷
ডোব্রিন্ডট বলেন, ‘‘আমরা পুশব্যাক অব্যাহত রাখব। আমরা মনে করি আমাদের কাছে এর পক্ষে আইনি যুক্তি রয়েছে৷''
তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে