
জার্মানিতে অনেকেই পড়াশোনা করতে চান। বৃত্তি ও নিজ খরচে পড়াশোনার সুযোগ আছে দেশটিতে। জার্মানির সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, সময়ানুবর্তিতা ও সামাজিক সংহতির কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দের দেশ জার্মানি। প্রতি বছর হাজারো শিক্ষার্থী দেশটিতে পড়তে যান।
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে নিচে ধাপে ধাপে একটি গাইড দেওয়া হলো, যা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাসঙ্গিক।
১. বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচন
আপনার আগ্রহ ও ক্যারিয়ার পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করুন। জার্মানির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে কোর্স অফার করা হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে জার্মান ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।
২. শিক্ষাগত যোগ্যতা পূরণ
জার্মানিতে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি সম্পন্ন করার পর একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রির কমপক্ষে ২৫% ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়। এটি জার্মানির ১৩ বছরের শিক্ষাবর্ষের সমতুল্য।
৩. ভাষা দক্ষতা অর্জন
যদি কোর্সটি ইংরেজিতে হয়, তবে IELTS বা TOEFL স্কোর প্রয়োজন। জার্মান ভাষায় কোর্সের জন্য TestDaF বা DSH পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। Goethe-Institut Dhaka-তে জার্মান ভাষা কোর্স ও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন
নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি বা Uni-Assist প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আবেদন করুন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের মধ্যে রয়েছে-
- Scholarship Union
- পাসপোর্ট
- শিক্ষাগত সনদপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট
- ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র
- মোটিভেশন লেটার
- সিভি
৫. ব্লকড অ্যাকাউন্ট খোলা
জার্মানিতে থাকার খরচের প্রমাণ হিসেবে একটি ব্লকড অ্যাকাউন্টে বার্ষিক ১১,৯০৪ ইউরো জমা রাখতে হয়। Fintiba বা Expatrio-এর মাধ্যমে এই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।
৬. স্বাস্থ্য বীমা গ্রহণ
জার্মানিতে থাকার জন্য স্বীকৃত স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক। BARMER (পাবলিক) বা Mawista (প্রাইভেট) বীমা পরিকল্পনা বিবেচনা করতে পারেন।
৭. ভিসার জন্য আবেদন
জার্মান দূতাবাস, ঢাকাতে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করুন। আবেদনের সময় নিচের ডকুমেন্টস প্রয়োজন:
- পাসপোর্ট
- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি চিঠি
- ব্লকড অ্যাকাউন্টের প্রমাণ
- স্বাস্থ্য বীমার সনদ
- শিক্ষাগত সনদপত্র
- ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র
- মোটিভেশন লেটার
- ভিসা আবেদন ফর্ম
- দূতাবাসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিতকরণ
ভিসা প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় নিতে পারে, তাই আগেভাগে আবেদন করা উচিত।
পড়াশোনার পর স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
১. ১৮ মাসের জব সিকিং ভিসা
পড়াশোনা শেষ করার পর আপনি ১৮ মাসের জন্য জব সিকিং ভিসার আবেদন করতে পারেন, যা আপনাকে জার্মানিতে চাকরি খোঁজার সুযোগ দেয়।
২. EU ব্লু কার্ড
উচ্চ বেতনের চাকরি পেলে EU ব্লু কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন, যা দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুযোগ প্রদান করে।
৩. সুযোগের কার্ড (Opportunity Card)
যদি আপনার জার্মানিতে চাকরির অফার না থাকে, তবে Opportunity Card-এর জন্য আবেদন করতে পারেন, যা আপনাকে জার্মানিতে থেকে চাকরি খোঁজার সুযোগ দেয়। এই কার্ডের জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা ও পয়েন্ট ভিত্তিক সিস্টেম রয়েছে।
তথ্যসূত্র: www.study-in-germany.com