
সুইজারল্যান্ডের গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রাম, যা ধনী বিদেশিদের জন্য বিশেষ রেসিডেন্সি সুবিধা প্রদান করে এবং বর্তমানে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে উচ্চ পরিমাণ অর্থ প্রদানকারী ব্যক্তিরা সুইজারল্যান্ডে বসবাসের অনুমতি পাচ্ছেন, যা সমতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি
সুইস সেক্রেটারিয়েট ফর মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৪৯৬ জন ব্যক্তি সুইজারল্যান্ডে গোল্ডেন ভিসার অধীনে রয়েছেন, যা ২০২২ সালে ছিল ৪০৪ জন। এই ভিসার খরচ ক্যান্টন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ওবওয়ালডেনে এটি CHF ২ লাখ ৫০ হাজার (৩ লাখ ডলার) এবং জুরিখে কমপক্ষে CHF ১ মিলিয়ন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো এই প্রোগ্রামের সমালোচনা করছে। গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বালথাসার গ্ল্যাটলি বলেন, "আমার আপত্তি হলো, অভিবাসন আইনের অধীনে সবাইকে সমানভাবে বিবেচনা করা হয় না। ধনীরা সেরা সুবিধা পায়।" তিনি আরো আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই ভিসা প্রোগ্রাম রাশিয়া ও চীনের ধনীদের জন্য সুইজারল্যান্ডে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে, যাদের সম্পদের উৎস সন্দেহজনক হতে পারে।
অন্যদিকে, ডানপন্থি সুইস পিপলস পার্টি এই প্রোগ্রামের পক্ষে। তাদের মতে, এই ধরনের অভিবাসন সমাজ ও অর্থনীতির জন্য উপকারী। সংসদ সদস্য বারবারা স্টেইনম্যান বলেন, "আমাদের এমন অভিবাসন দরকার, যা সমাজ ও অর্থনীতির জন্য লাভজনক, এবং এই প্রোগ্রাম সেই লক্ষ্য পূরণ করে।"
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
সুইজারল্যান্ড ছাড়াও পর্তুগাল, গ্রিসসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও গোল্ডেন ভিসা বা সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট (CBI) প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। তবে এই প্রোগ্রামগুলো নিয়েও সমালোচনা রয়েছে, বিশেষ করে সমতা ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ে।
সুইজারল্যান্ডের গোল্ডেন ভিসা প্রোগ্রাম অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হলেও এটি সমাজে বৈষম্য ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করছে। এই প্রোগ্রামের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও জনমতের উপর।
তথ্যসূত্র: সুইস ইনফো