Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

মাল্টার গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১০:৫৯

মাল্টার গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা

নির্দিষ্ট অঙ্কের বিনিয়োগসহ অন্যান্য আর্থিক পদক্ষেপের মাধ্যমে গোল্ডেন পাসপোর্ট সুবিধা দিয়ে আসছে ইউরোপের দেশ মাল্টা। এ নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগও উঠেছে। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ আদালত মাল্টার গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আদালত বলেছেন, মাল্টাকে অবশ্যই বিদেশিদের কাছে পাসপোর্ট বিক্রির এ কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে। খবর বিবিসি।

আদালত বলেন, ‘ইইউর সদস্য রাষ্ট্র অর্থ বা বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব প্রদান করতে পারে না। এটি জাতীয়তাকে একটি বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করে।’

মাল্টা সরকার তাৎক্ষণিকভাবে এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কোনো মন্তব্য করেনি। তবে একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাসকট। তার মতে, বর্তমান নীতিতে কিছু পরিবর্তন এনে প্রকল্পটি অব্যাহত রাখা যেতে পারে।

এদিকে রায় মেনে না নিলে মাল্টার ওপর মোটা অঙ্কের জরিমানার ঝুঁকি রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

মাল্টার নাগরিকত্ব পাওয়া মানেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোনো দেশে বসবাস ও কাজ করার সুযোগ। এমনকি ইইউ নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার পাওয়া যায়। ফলে মাল্টার এ প্রকল্প একক দেশের সিদ্ধান্ত হলেও পুরো ইইউর ওপর প্রভাব ফেলে।

ব্রাসেলসের চাপের মুখে সাইপ্রাস ও বুলগেরিয়া এরই মধ্যে পাসপোর্ট বিক্রির প্রকল্প বাতিল করেছে। এ ধরনের বিশেষায়িত পাসপোর্টের সুবিধা নিয়ে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

মাল্টা ২০২০ সালে গোল্ডেন পাসপোর্ট প্রকল্পে কিছু পরিবর্তন আনে। সর্বশেষ নিয়ম অনুসারে, দেশটিতে নাগরিকত্ব পেতে আবেদনকারীকে কমপক্ষে ৬ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হয়, বাড়ি কিনতে বা ভাড়া নিতে হয়। এছাড়া ১০ হাজার ইউরো দাতব্য সংস্থায় দান এবং তিন বছর দেশটিতে বসবাস করতে হয়। তবে ৭ লাখ ৫০ হাজার ইউরো বিনিয়োগ করলে নাগরিকত্ব পাওয়ার সময়সীমা এক বছরে কমিয়ে আনা যায়।

এফটির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাল্টার পাসপোর্ট পাওয়া রাজনৈতিক প্রভাবশালী ১৬ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা মাল্টায় গোল্ডেন পাসপোর্ট পাওয়ার পর বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত বা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন।

ইউরোপীয় কমিশনের মতে, এ প্রকল্পে শুধু বৈধভাবে বসবাস করলেই মাল্টার নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। ফলে দেশটির সঙ্গে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীর সত্যিকার অর্থে কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। এ বিষয়ে আদালতও একমত প্রকাশ করে বলেন, একটি প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিতে এ ধরনের নাগরিকত্ব বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করে ইইউ-চুক্তির বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে মাল্টা।

২৯ এপ্রিল দেয়া এ রায় গত অক্টোবরে আদালতের তৎকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল অ্যান্থনি কলিন্সের একটি প্রতিবেদনের বিপরীতে মত দিয়েছে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ইইউ আইন অনুসারে বৈধ নাগরিকত্ব পেতে ব্যক্তি ও দেশের মধ্যে ‘প্রকৃত যোগসূত্র’ প্রয়োজন, এটি কমিশন প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত কে ‘তাদের নাগরিক হবে এবং ফলস্বরূপ, সে একজন ইইউ নাগরিক’।

তথ্যসূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ

Logo