অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছেন জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে। ভাড়া, খাবার ও অন্যান্য খরচ এতটাই বেড়েছে যে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি টিকে থাকার লড়াই করছেন।  

ভারত থেকে আসা সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী আলিপ্রিয়া বিশ্বাস জানান, প্রথম বছর তিনি টাকার অভাবে শুধু ভাত আর টিনজাত টুনা মাছ খেয়ে কাটিয়েছেন। তার পরিবার দেশে থেকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করলেও অস্ট্রেলিয়ায় জীবনযাত্রার খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়ে। চাকরি পেতে সময় লাগে, আর প্রথম কাজ ছিল একটি অবৈধ বারটেন্ডিং চাকরি।  

চীনের এক শিক্ষার্থী জানান, দেশে রেস্টুরেন্টে খাওয়া খুব সস্তা হলেও অস্ট্রেলিয়ায় তা অসম্ভব। তিনি মাসের পর মাস ইনস্ট্যান্ট নুডলস খেয়ে কাটিয়েছেন, পরে কাজ পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পান।  

সিডনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির অধ্যাপক অ্যালান মরিস বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই আর্থিক সংকটে ভুগছেন। ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতি পাঁচজন শিক্ষার্থীর একজন খাবার বাদ দিচ্ছেন টাকার অভাবে। বর্তমানে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৩৬ শতাংশ শিক্ষার্থী আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে চাকরির ওপর নির্ভর করেন। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৭৮ শতাংশ। ফলে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের চাপ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।  

ভাড়া বাজারও শিক্ষার্থীদের জন্য বড় সমস্যা। ভিয়েতনামের শিক্ষার্থী মাই হুইন জানান, প্রথমে তিনি সপ্তাহে ৫০০ ডলার দিয়ে ছোট্ট একটি স্টুডেন্ট অ্যাকোমোডেশনে থাকতেন। পরে সস্তা শেয়ার হাউসে উঠলেও সেখানে নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সমস্যা ছিল।  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের কাজের সময়সীমা বাড়ানো সমাধান নয়, কারণ এতে পড়াশোনার ক্ষতি হয়। বরং বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারকে বাসস্থান, পরিবহন ছাড় ও স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা বাড়াতে হবে।