অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা - পর্ব ৪
সাবজেক্ট বাছাই করতে পারেন পিআর পরিকল্পনা মাথায় রেখে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২২
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশের শিক্ষার্থীদের প্রায় শতভাগকে ভিসা দিচ্ছে দেশটি। দেশটিতে যেতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি, স্কলারশিপ, সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে মাইগ্রেশন কনসার্ন কথা বলেছে দেশের ও অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের সাথে। তারা দিয়েছেন নানা পরামর্শ। তা নিয়ে মাইগ্রেশন কনসার্নের পাঁচ পর্বের ধারাবাহিকের আজ ৪র্থ পর্ব।
উন্নত শিক্ষা, খণ্ডকালীন কাজ করতে পারা, সাথে স্থায়ী হওয়ার সুযোগের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে অস্ট্রেলিয়া হয়ে উঠেছে স্বপ্নপূরণের গন্তব্য। ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশটিতে পড়াশোনা করতে যাওয়ার পরিকল্পনা পর্বেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি কি স্থায়ী হতে চান অস্ট্রেলিয়ায় নাকি পড়াশোনা শেষে ফিরবেন বাংলাদেশে। কিন্তু থেকে যেতে চাইলে অস্ট্রেলিয়ায় পিআর পাওয়া যায় মূলত কোন কোন ক্যাটাগরিতে?
অস্ট্রেলিয়ায় পিআর হয় সাধারণত চার বা পাঁচটি পথে। ১. স্কিলড ইন্ডিপেনডেন্ট ভিসা। ২. স্কিলড নমিনেটেড ভিসা। ৩. স্কিলড ওয়ার্ক রিজিওনাল ভিসা। ৪. অ্যামপ্লোয়ার স্পন্সর ভিসা। তাছাড়া কৃতী স্কলারদেরও পিআর ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ায় পিআর মূলত একটা পয়েন্ট সিস্টেম প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় সাধারণত নম্বর পেতে হয় ৬৫ থেকে ৯০-এর মধ্যে। বেশি চাহিদার পেশাজীবীদের কম নম্বরে পিআর পেতে যেমন দেখা যায় আবার চাহিদা নেই এমন পেশার লোকজন ৯০ পেলেও পিআর পাওয়া কঠিন হতে পারে।
ফলে যদি দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার ভাবনা মনে থাকে, তাহলে এমন বিষয়েই পড়তে যেতে হবে, যে পেশার পেশাজীবীদের সংকট রয়েছে দেশটিতে। যে বিষয়ে পড়াশোনা করলে পিআর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেসব বিষয় পড়তে পারে শিক্ষার্থীরা। যেমন নার্সিং, আর্লি চাইন্ডহুড টিচিং, সিভিল, ইলেকট্রিক, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, আর্টিফিসিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এসব বিষয় পড়লে পিআরের সুযোগ থাকে।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের মেলটন মাইগ্রেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, অস্ট্রেলিয়ায় আসার আগে অবশ্যই চিন্তা করতে হবে যে ভবিষৎ গন্তব্য কোথায়? কারণ পড়ার একটা পারপাস থাকতে হবে। কেউ যদি মনে করে যে দেশটিতে পিআর পেতে চায়, তাহলে তার পিআরের সাবজেক্ট নিয়ে পড়ার টার্গেট করতে হবে।
সাধারণত নিজের পছন্দের বিষয়ে পড়া শেষ করেও কিছু ট্রেড কোর্স আছে, সেটা করে কাজ করলেও পিআরে হেল্পফুল হতে পারে বলে মনে করেন মেলবোর্নের ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট কামাল উদ্দিন। তার মতে, কিছু ট্রেড কোর্স আছে যেমন, কার্পেন্টার, ইলেকট্রিশিয়ান, মটর মেকানিক এসব পিআরের জন্য খুবই ডিমান্ডিং। তবে মনে রাখতে হবে কেবল ট্রেড কোর্সের জন্য সাধারণত ভিসা পাওয়া যায় না। এসব অস্ট্রেলিয়ায় আসার পর মূল পড়াশোনা মানে গ্র্যাজুয়েট শেষ করে এসব কোর্স করতে পারে শিক্ষার্থীরা।
অস্ট্রেলিয়ার পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক ভিসা একটা দারুণ সুযোগই বলা চলে। যাতে শিক্ষার্থী দুই থেকে চার বছর পর্যন্ত পড়াশোনার রিলেভেন্ট ফিল্ডে চাকরি করে, স্কিল অ্যাসেসমেন্টে এগিয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি মাথায় নিয়েই পড়াশোনার বিষয় নির্বাচন, জীবনযাপনের পরিকল্পনা করা দরকার। তবে এইএস স্টাডি এ্যাব্রডের ফাউন্ডার ও সিইও ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট শুভাশিষ চাকমা সতর্ক করে জানান, কোনো শিক্ষার্থী যেন প্রথম এক বছর কোনো চাকরি না করে, প্রথমত শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে পড়াশোনার সিস্টেমটা। সেটা গুছিয়ে উঠতে পারলে কাজের দিকে যাওয়া ভালো হবে।
তাই সবার আগে প্রয়োজন নিবিড় পড়াশোনায় ভালো ফলাফল করা, সময়মতো ডিগ্রিটা শেষ করা। পড়াশোনা শেষ করতে না পারলে, ডিগ্রি অর্জিত না হলে, খালি হাতে দেশে ফেরার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর ডিগ্রি পেলে, রিলেভেন্ট ফিল্ডে কাজ করলে ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট।
logo-1-1740906910.png)