অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা - পর্ব ৩
সময়মতো আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে অভিভাবককে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৪৩

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের স্টুডেন্টদের জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশের শিক্ষার্থীদের প্রায় শতভাগকে ভিসা দিচ্ছে দেশটি। দেশটিতে যেতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি, স্কলারশিপ, সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়ে মাইগ্রেশন কনসার্ন কথা বলেছে দেশের ও অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের সাথে। তারা দিয়েছেন নানা পরামর্শ। তা নিয়ে মাইগ্রেশন কনসার্নের পাঁচ পর্বের ধারাবাহিকের আজ তৃতীয় পর্ব।
বিদেশে পড়াশোনা কেবল শিক্ষার্থী নয়, তাদের বাবা-মায়েরও স্বপ্ন। মেধাবী শিক্ষার্থীরা স্কলারশিপ পেয়ে গেলে খরচের বোঝা থেকে মুক্ত হন অভিভাবকরা। কিন্তু সবাই কি পায় স্কলারশিপ? কেবল অস্ট্রেলিয়া নয়, সারা বিশ্বের পড়াশোনা খরচ অনেক। আর বিশ্বব্যাপী স্কলারশিপও সীমিত। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচ কত? ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট জানাচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাচেলর ডিগ্রি করতে লাগে কমপক্ষে ২০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার, মাস্টার্স ডিগ্রিতে লাগে ২৫ হাজার ডলার আর ডক্টরাল ডিগ্রিতে লাগতে পারে আরো বেশি কমপক্ষে ৩২ হাজার ডলার। তাছাড়া আরো থাকছে বাড়ি ভাড়া, খাওয়া, যাতায়াতের মতো খরচ।
ফলে সন্তানের পড়াশোনায় কত টাকার প্রয়োজন, সেই টাকার সংস্থান আসবে কোথা থেকে, অভিভাবকদের সেই পরিকল্পনা নেওয়া দরকার আগে থেকেই। এইএস স্টাডি এ্যাব্রডের ফাউন্ডার ও সিইও ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট শুভাশিষ চাকমা জানান, সন্তানকে বিদেশে পাঠাতে চাইলে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ব্যাংক ব্যালান্স লাগবে। শিক্ষার্থীকে এক বছরের ফান্ড দেখাতে হবে। একই সাথে এই টাকার সোর্স দেখাতে হবে। অভিভাবক ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, ইনকাম ট্যাক্সের ডকুমেন্ট লাগবে। আর জব করলে লাগবে জব সার্টিফিকেট।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের মেলটন মাইগ্রেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (MARN2518732) কামাল উদ্দিন মনে করেন, এ ক্ষেত্রে লংটার্ম পরিকল্পনা নিতে হবে অভিভাবকদের। তবে ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টে কোনো ফেইক ডকুমেন্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
অনেক অভিভাবক মনে করেন, ছেলেমেয়েরা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করবে, ইনকাম করবে। তা জমিয়ে টিউশন ফি তো দিতে পারবে। অভিভাবকদের এমন ধারণা বাদ দেওয়ার পরামর্শ ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টদের। শুভাশিষ চাকমা জানান, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কাজ করে লিভিং কস্ট জোগাবে, এটা সম্ভব না।
তাদের পরামর্শ, অস্ট্রেলিয়া বা বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে পাঠালে হাতে রাখতে হবে সব খরচ। যাতে অন্তত এক বছর কোনো কাজ করতে না হয় ছেলেমেয়েদের। কারণ কাজ করতে গিয়ে পড়াশোনার ক্ষতি হলে ভোগান্তিতে পড়বে সন্তানরা।
কাজের কারণে ভিসার শর্ত ভাঙলে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দেশেও ফিরে আসার আশঙ্কা থেকে যায়।
অভিভাবকদের আর্থিক সাপোর্ট, শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত শিক্ষাজীবন, একসময় তাদের অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হওয়ার পথ খুলে দিতে পারে। কেননা মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর তারা যেন কাজ পেতে পারে, সে জন্য অস্ট্রেলিয়া দিয়ে থাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্সি। আর সেই পেশার চাহিদা থাকলে, স্কোর বেশি থাকলে, শিক্ষার্থীরা স্থায়ীও হতে পারে স্বপ্নের দেশ অস্ট্রেলিয়ায়।