বিদেশে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ব্যয় সর্বোচ্চ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৭

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার ব্যয় ৬৬ কোটি ২০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে এ ব্যয় আড়াই গুণ বেড়েছে। একই সময়ে বিদেশগামী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৫২ হাজার ৭৯৯ শিক্ষার্থী ৫৫টি দেশে পড়তে গেছেন, যা ২০১৩ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থানের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা তাদের বিদেশে যেতে উৎসাহিত করছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ‘রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন’-এর আশা করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি।
ডেনমার্কে অধ্যয়নরত জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বিদেশে একই ডিগ্রিতে ১-৩ লাখ টাকা বেতন পাওয়া যায়, দেশে ১৫ হাজার টাকার চাকরিও অনিশ্চিত।” জার্মানিতে পড়ছেন সুমাইয়া রশিদ, যিনি বলেন, “বিদেশে ইন্টার্নশিপেই চাকরির নিশ্চয়তা, দেশে চাকরি পেতে কোচিং লাগে।”
বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, “তরুণদের দেশ ছাড়ার মূল কারণ কর্মজীবনের অনিশ্চয়তা। শিল্পায়ন ছাড়া কর্মসংস্থান সম্ভব নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১৭ হাজার ৯৯ জনে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬% বেশি। এতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানো দেশের তালিকায় অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. রফিকুল আবরার বলেন, “বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন। ‘ব্রেইন ড্রেইন’ নয়, ‘ব্রেইন সার্কুলেশন’ ভাবতে হবে।” তিনি নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ ও মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের বিদেশে যাওয়া রোধে দেশেই মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক বণিক বার্তা