ইউরোপে অভিবাসীদের রেমিট্যান্সে টিকে আছে পরিবার ও দেশ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৬
ইউরোপে বসবাসরত অভিবাসীরা প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের অর্থ নিজ দেশে পাঠাচ্ছেন, যা পরিবার ও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, অভিবাসীরা সাধারণত মাসে ২০০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার পাঠান। ছোট মনে হলেও এই অর্থগুলো মিলিত হয়ে বড় অঙ্কে পরিণত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা অভিবাসীরা বছরে প্রায় ৬ হাজার ৩০০ কোটি ইউরো পাঠাচ্ছেন নিজ দেশে।
ইনফো মাইগ্র্যান্টসের প্রতিবেদনে রেমিট্যান্সকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি। পরিবারগুলো এই অর্থ দিয়ে খাবার, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার খরচ মেটাচ্ছে। দুর্যোগ বা হঠাৎ অসুস্থতার সময়ও এটি সুরক্ষা হিসেবে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলছে, দুর্বল অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো ২০২৩ সালে প্রায় ৬৫ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এই অর্থ সরকারি উন্নয়ন সহায়তার চেয়েও বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স শুধু পরিবারকে টিকিয়ে রাখে না, বরং ভঙ্গুর অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতা দেয়।
তবে অর্থনীতি বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলো সতর্ক করেছে, দক্ষ কর্মীরা বিদেশে চলে গেলে ছোট অর্থনীতির দেশগুলোতে চাপ তৈরি হয়। অন্যদিকে, অভিবাসীদের গ্রহণকারী দেশগুলোও লাভবান হয়। তারা শ্রম ঘাটতি পূরণ করে, কর প্রদান করে এবং সামাজিক সুরক্ষায় অবদান রাখে।
শরণার্থীদের রেমিট্যান্স আলাদাভাবে পরিমাপ করা কঠিন। আইনি জটিলতা, ভাষাগত দুর্বলতা ও সীমিত কর্মসংস্থানের কারণে তারা তুলনামূলক কম অর্থ পাঠান। জার্মানির এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরণার্থীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর হার ২০১৩ সালে ছিল ১৫ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে কমে ৭ শতাংশে নেমে আসে। তবে স্থিতিশীল হওয়ার পর তাদের আয় বাড়ে এবং রেমিট্যান্সও বৃদ্ধি পায়।
ট্যালেন্ট বিয়ন্ড বাউন্ডারিজের গবেষণা বলছে, দক্ষ শরণার্থীরা চাকরি পাওয়ার পর মাসে গড়ে ৪৩০ ডলার পাঠাচ্ছেন, যা স্থানীয় আয়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। ইউরোপ, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় চাকরি পাওয়া শরণার্থীদের ৮৪ শতাংশই এখন নিয়মিত অর্থ পাঠাচ্ছেন।
logo-1-1740906910.png)