বাংলাদেশে আসছে বিশ্বখ্যাত পেমেন্ট গেটওয়ে পেপ্যাল
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৫
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ শিগগির কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
২ ডিসেম্বর রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। গভর্নর বলেন, পেপ্যাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। বর্তমানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলা ও ছোট চালানে পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হয়ে যায়। পেপ্যাল চালু হলে তারা সহজেই ইউরোপ, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশে পণ্য পাঠাতে পারবেন এবং দ্রুত অর্থ দেশে আনতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অভাবে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বিদেশ থেকে টাকা আনার সময় বিড়ম্বনায় পড়েন। অনেক সময় তারা তাদের পারিশ্রমিকও পান না। পেপ্যাল চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটায় ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারকারীর ব্যাংক বা কার্ডের সঙ্গে নিরাপদভাবে সংযুক্ত হয়ে দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য সুরক্ষা ও রিফান্ডের সুবিধাও রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশে ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক লেনদেনে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
নগদ লেনদেন কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে গভর্নর বলেন, দেশের দুর্নীতির মূলেই রয়েছে নগদ টাকার লেনদেন। যেখানে দুর্নীতি আছে, সেখানে নগদ লেনদেন জড়িত। তিনি জানান, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাপে ধাপে নগদ লেনদেন কমানোর পরিকল্পনা করছে।
কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, বর্তমানে মোট ঋণের মাত্র ২ শতাংশ কৃষি খাতে দেওয়া হয়। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। এছাড়া এসএমই ঋণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থাকলেও ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার অভাবে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা যাচ্ছে না।
তিনি খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টন। বর্তমানে তা প্রায় ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও উৎপাদন তিন গুণ বেড়েছে, যা একটি বড় অর্জন।
অনুষ্ঠানে কৃষি খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮ জন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পাঁচ শতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়েছে।
logo-1-1740906910.png)