Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বিদেশ থেকে কফিনে ফেরা প্রবাসী: বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৭

বিদেশ থেকে কফিনে ফেরা প্রবাসী: বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা জীবিকার সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমালেও অনেকেই ফিরছেন কফিনে। ২০২৪ সালে ৪,৮১৩ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃতদেহ দেশে ফিরেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬১ জন বেশি। এই সংখ্যা ২০২৩ সালে ছিল ৪,৫৫২; ২০২২ সালে ৩,৯০৪; ২০২১ সালে ৩,৮১৮; এবং ২০২০ সালে ৩,১৪০। প্রতি মাসে গড়ে ৪০০টি মৃতদেহ দেশে আসছে অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৩টি কফিন। ​

সালাউদ্দিনের গল্প: হঠাৎ মৃত্যু ও পরিবারের প্রশ্ন 

কুমিল্লার কাজী সালাউদ্দিন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। পরিবারের জন্য সুখের আশা নিয়ে তিনি সেখানে যান। কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় ৪৪ বছর বয়সী এই যুবক আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। সৌদি কর্তৃপক্ষের দেওয়া মৃত্যুর সনদে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হলেও তার পরিবার এ ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে পারছে না। কারণ, সালাউদ্দিনের পূর্বে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল না। তার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম জানান, তিনি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে গিয়েও সঠিক কারণ জানতে পারেননি।​

মৃত্যুর কারণ: অজানা ও অনির্দিষ্ট

প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন:​ 

- অস্বাস্থ্যকর কর্মস্থল ও আবাসন

- অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানসিক চাপ

- স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তার অভাব​

ওয়ার্ব ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক জাসিয়া খাতুন বলেন, "মৃত্যুর সনদে 'হৃদরোগ' উল্লেখ করা হলেও সঠিক কারণ জানার জন্য আরো মেডিকেল পরীক্ষা প্রয়োজন।" তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।​

গালফ অঞ্চলে মৃত্যুর হার বেশি 

২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) দেশগুলো থেকে ১৭,৮৭১ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃতদেহ দেশে ফিরেছে। এর মধ্যে ৫,৬৬৬ জন সৌদি আরব, ১,৯১৩ জন সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ১,৮৯৩ জন ওমান থেকে। ​

প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুর ফলে তাদের পরিবারগুলো মানসিক ও আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়। সরকারের উচিত প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মপরিবেশ উন্নত করা এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে উদ্যোগ নেওয়া।​

প্রবাসী শ্রমিকদের মৃত্যু শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি একটি মানবিক ট্র্যাজেডি। এই সমস্যার সমাধানে সরকার, প্রবাসী কল্যাণ সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

তথ্যসূত্র: দ্য ডেইলি স্টার

Logo