
কোন দেশের পাসপোর্ট দুর্বল হলে, নানান সমস্যার ভেতর দিয়ে যায় সেই দেশের মানুষ। বিদেশ যেতে, ভিসা পেতে নানামুখী জটিলতায় পড়তে হয়। যেমন:
এক: ভিসা জটিলতা: বেশিরভাগ দেশে প্রবেশের জন্য আগে ভাগে ভিসার আবেদন করতে হয়, ভিসা পাবার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল হয়।অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, চাকরির প্রমাণ, প্রপার্টি নথি ইত্যাদি জমা দিতে হয়।
দুই: ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা: দুর্বল পাসপোর্টধারীরা খুব কম দেশে ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান। ফলে জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ কমে যায়।
তিন: কাজ এবং পড়াশোনার সুযোগ কম: অনেক উন্নত দেশ (যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা) দুর্বল পাসপোর্টধারীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট পেতে কঠোর শর্ত জুড়ে দেয়। এসব দেশে চাকরির জন্য স্পন্সরশিপ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
চার: বৈষম্যমূলক আচরণ: দুর্বল পাসপোর্টধারীদের এয়ারপোর্টে বেশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়। ইমিগ্রেশনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, এবং কখনও কখনও ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি থাকে।
পাঁচ: মাল্টিপল ট্রানজিট ভিসা: দুর্বল পাসপোর্টধারীরা সরাসরি গন্তব্যে যেতে পারলেও অনেক সময় ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হয়, যা বাড়তি ঝামেলা তৈরি করে।
ছয়: অর্থনৈতিক প্রভাব: দুর্বল পাসপোর্টধারী দেশের মানুষের ভিসার জন্য বেশি ফি দিতে হয়। উন্নত দেশগুলোয় বিনিয়োগ, ব্যবসা বা বৈধ আবাসনের সুযোগ তাদের জন্য সীমিত হয়ে যায়।
সাত: রাজনৈতিক প্রভাব: কিছু দেশ দুর্বল পাসপোর্টধারী দেশের মানুষকে আশ্রয়প্রার্থী মনে করে শক্তিশালী পাসপোর্টধারী দেশের মানুষ এবং অনেক সময় তাদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে।অনেক সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে বিদেশে সুরক্ষা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
তাহলে পাসপোর্টের সূচকে বাংলাদেশের কী অবস্থা?
হেনলি পাসপোর্টের সূচক অনুযায়ী, ২০২৫ সালে, বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান ১০০। বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে মাত্র ৪০টি দেশে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় মধ্যে মালদ্বীপের পাসপোর্ট সবচেয়ে শক্তিশালী, তাদের অবস্থান ৫৩ কারণ তারা ৯৪টি দেশে ভিসা ছাড়া যেতে পারেন। আর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকায় শীর্ষে আছে সিঙ্গাপুর, দেশটির নাগরিকরা ১৯৫টি দেশে ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন।