এনআইডি তথ্য সংশোধনের ফি কয়েক গুণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন প্রস্তাবিত নিয়ম অনুমোদিত হলে প্রথমবারের আবেদনেই নাগরিককে দিতে হবে ৩৪৫ টাকা। বর্তমানে এই ফি ২৩০ টাকা। তবে একই ব্যক্তি যদি দ্বিতীয়বার বা তার বেশি সংশোধনের আবেদন করেন, সে ক্ষেত্রে ফি ধাপে ধাপে বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭৫০ টাকায় পৌঁছাবে।
ইসির তথ্য বলছে, এখন প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ এনআইডি তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। সময়মতো নিষ্পত্তি না হওয়া, জটিল কাগজপত্র এবং দালালচক্রের হয়রানির কারণে বহু নাগরিক ভোগান্তিতে পড়েন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, অনেকেই একাধিকবার সংশোধনের আবেদন জমা দেন এবং ভুলত্রুটি রেখে দেন, যার ফলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। এই কারণেই ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন।
নতুন প্রস্তাবে এনআইডি সংশোধনের আবেদনের ধরনকে মোট ৯টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছোটখাটো বানান ভুল বা সাধারণ তথ্য সংশোধনের আবেদন ৭ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির লক্ষ্য রাখা হয়েছে। নাম পরিবর্তন, অভিভাবকের নাম বা শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের মতো অপেক্ষাকৃত জটিল আবেদন ১০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। আর সবচেয়ে জটিল ধরনের সংশোধন ২১ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সবচেয়ে আলোচিত পরিবর্তন এসেছে জন্মতারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে। আগে এ কাজটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়েই করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে এই ক্ষমতা সরাসরি ঢাকায় কেন্দ্রীভূত করা হচ্ছে। ফলে গ্রামের বা দূর-মফস্বলের আবেদনকারীদের ঢাকায় এসে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এতে যাতায়াত, আবাসন ও অতিরিক্ত নথিপত্র সংগ্রহের ঝামলা বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
একই সঙ্গে আপিল ও রিভিশন আবেদনেও ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৭৫০ টাকা। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আবেদন বাতিল হলেও এই ফি ফেরত দেওয়া হবে না। ফলে ভুল তথ্য দেওয়া বা অসম্পূর্ণ কাগজপত্র জমা দিলে আর্থিক ঝুঁকি আরো বাড়বে আবেদনকারীর জন্য।
সব মিলিয়ে ফি বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীভূত আবেদনপ্রক্রিয়া চালু হলে এনআইডি সংশোধন নাগরিকদের জন্য আগের তুলনায় আরো ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। বিশেষ করে প্রান্তিক এলাকার মানুষকে অতিরিক্ত খরচ ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
logo-1-1740906910.png)