Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৮০ হাজার প্রার্থীর ভুল রেজাল্ট

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:০০

আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৮০ হাজার প্রার্থীর ভুল রেজাল্ট

বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ইংরেজি দক্ষতা নির্ধারণ পরীক্ষা আইইএলটিএস, যার ওপর নির্ভর করেই লক্ষাধিক মানুষ কাজ, পড়াশোনা ও অভিবাসনের সুযোগ পান। অথচ সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত এই পরীক্ষার প্রায় ৮০ হাজার অংশগ্রহণকারীর ফলাফল ভুল ছিল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ, চীন ও ভিয়েতনামে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির প্রমাণও মিলেছে। দ্য টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এই অন্তর্ঘাতের গভীরতা।

আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার লিসেনিং ও রিডিং অংশে একটি “কারিগরি ত্রুটি” ঘটে। এর ফলে পরীক্ষার প্রায় এক শতাংশ ফলাফল, অর্থাৎ ৭৮ হাজারেরও বেশি স্ক্রিপ্ট, ভুলভাবে মূল্যায়ন হয়। অনেক অনুত্তীর্ণকে ‘পাস’ দেখানো হয়, আবার কারো প্রকৃত ফলাফল কমে যায়।

সমস্যাটি এত দেরিতে ধরা পড়ায় ভুলভাবে ‘পাস’ হওয়া অনেকেই এই স্কোর ব্যবহার করে ব্রিটেনে স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসা পেয়েছেন। বিশেষ করে দুর্বল ইংরেজি দক্ষতা থাকা এনএইচএস কর্মী, সামাজিক সেবাকর্মী ও বিদেশি ছাত্রদের সংখ্যা বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে রোগীদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এক কেয়ার কর্মীর ঘটনায় দেখা গেছে, তিনি “breathing” (শ্বাস নিচ্ছে) এবং “bleeding” (রক্তপাত) শব্দ দুটির অর্থও আলাদা করতে পারেননি। এমন ভুল বোঝাবুঝি জরুরি সেবা ব্যবস্থায় মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

একই সঙ্গে বিশ্বের কয়েকটি দেশে পরীক্ষার প্রশ্ন আগেই বিক্রি হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।

বাংলাদেশে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে দুজনকে, যারা আইইএলটিএস পরীক্ষার “ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের কপি” এক থেকে আড়াই হাজার পাউন্ডে বিক্রি করছিল।

ভিয়েতনামে প্রশ্নফাঁসের সন্দেহে ব্রিটিশ কাউন্সিল শেষ মুহূর্তে একটি নির্ধারিত পরীক্ষা বাতিল করে।

চীনে পরীক্ষায় জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে, যেখানে পরীক্ষার্থী ‘পূর্বপ্রাপ্ত প্রশ্ন’ মুখস্থ করেই উত্তীর্ণ হচ্ছিলেন।

বেশ কিছু ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে শিক্ষার্থী নিয়োগ স্থগিত করেছে। অভিযোগ, অনেক ছাত্রের ইংরেজি দক্ষতার ঘাটতি এতটাই বেশি যে তারা ক্লাস বুঝতেই পারছে না।

শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ বলেন, “প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ ভুল ফলের কারণে ভিসা পেয়েছেন। যাদের প্রকৃত দক্ষতা নেই তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।”

অন্যদিকে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্বল তদারকি ও পরীক্ষায় দুর্নীতি অভিবাসন ব্যবস্থার ওপর জনবিশ্বাস নষ্ট করছে।

আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ জানায়, ভুল ফল পাওয়া সকল পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সংশোধিত স্কোর পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। তবে যারা ইতোমধ্যে ভিসা পেয়ে ব্রিটেনে অবস্থান করছেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক মানের পরীক্ষায় এ ধরনের ভুল শুধু পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুণ্ন করেনি, বরং আন্তর্জাতিক অভিবাসন প্রক্রিয়াকেও বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলেছে।

Logo