লিবিয়ার তাজুরা বন্দিশালায় আটক ১৭৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২১
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির তাজুরা বন্দিশালায় আটক থাকা ১৭৩ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় চার্টার্ড করা বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের প্রত্যাবাসন করা হয়। লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, আটক বাংলাদেশিদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আইওএমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জানায়, আটক অভিবাসীদের সাক্ষাৎকার ও পরিচয় যাচাইয়ের পর ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়। এরপর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং আইওএমের সহায়তায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর একই প্রক্রিয়ায় ১৭০ জন বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসেন। ২০২৩ সালের জুন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ হাজার বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরতে সহায়তা করেছে দূতাবাস।
লিবিয়ায় রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার বিদায় অনুষ্ঠানে বলেন, “আপনারা আল্লাহর রহমতে একটি বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ভূমধ্যসাগরের প্রাণঘাতী পথ থেকে বেঁচে ফিরতে পারা দ্বিতীয় জীবনের মতো।” তিনি অভিবাসীদের উদ্দেশে বলেন, অবৈধ পথে বিদেশ গমন কখনোই নিরাপদ নয়। এ পথে জীবন, সম্মান, সময় ও অর্থ সবকিছুই ঝুঁকির মুখে পড়ে। তাই বৈধ পথ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং নিরাপদ অভিবাসনই গ্রহণযোগ্য উপায়।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। মানব পাচারকারী চক্রের সহায়তায় আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা ইউরোপে যাওয়ার আশায় লিবিয়ায় আসতে শুরু করেন। অভিযোগ রয়েছে, পাচারকারীরা তাদের আটক করে নির্যাতন ও জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করে এবং মুক্তিপণ আদায় করে।
অন্যদিকে অনুপযুক্ত নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক অভিবাসী নিহত বা নিখোঁজ হচ্ছেন। আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে এ সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজারে পৌঁছেছে। গত মাসে লিবিয়ার উপকূলে দুটি নৌকা ডুবির ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি ছিলেন। এছাড়া অক্টোবরের শেষে আরেকটি নৌকা ডুবে ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা যান, তবে প্রায় ৯০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
logo-1-1740906910.png)