বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবগামী কর্মীদের জন্য মেডিকেল টেস্টে হয়রানি বা অনিয়মের অভিযোগ গ্রহণে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। সম্প্রতি রিয়াদে গালফ হেলথ কাউন্সিলের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা বাসস। বৈঠকে অংশ নেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া এবং গালফ হেলথ কাউন্সিলের মহাপরিচালক সুলেইমান বিন সালেহ আলদাখিল।  

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গালফ হেলথ কাউন্সিলের অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টারগুলোতে নানা ধরনের অনিয়ম হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্দেশনা না মানা, ভুয়া রিপোর্ট তৈরি, অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনলাইন পোর্টালে ফলাফল আপলোডে ব্যর্থতা। এছাড়া ঢাকা ও বড় শহরকেন্দ্রিক টেস্ট সেন্টারগুলোতে গ্রামের কর্মীদের অতিরিক্ত সময়, খরচ ও ভোগান্তি পোহাতে হয়।  

বাংলাদেশ আরো উল্লেখ করে, গালফ হেলথ কাউন্সিলের কোনো স্থায়ী তদারকি অফিস না থাকায় কার্যকর নজরদারি হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, বাংলাদেশ প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত না হলে কোনো মেডিকেল সেন্টারকে অনুমোদন দেওয়া যাবে না। এতে প্রতারণা ও হয়রানি কমবে।  

এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং গালফ হেলথ কাউন্সিলের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ১১০টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোকে ব্যবহার করে নিয়মিত মনিটরিংয়ের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।  

বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়। তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একজন করে ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়, যাতে যোগাযোগ ও সমন্বয় আরো কার্যকর হয়। এছাড়া ১১০টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যাতে প্রবাসী কর্মীরা প্রতারণা ও শোষণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন।  

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় শিগগিরই গালফ হেলথ কাউন্সিলকে একটি চিঠি দেবে, যেখানে মেডিকেল টেস্টে তাদের তদারকি ভূমিকা স্পষ্ট করা হবে এবং মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করা হবে।