মালয়েশিয়ায় চাকরি পেতে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে প্রায় ৩০ হাজার রিঙ্গিত (৮ লাখ টাকার বেশি) পর্যন্ত খরচ করতে হয়। এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্ল্যান্টেশন ও কমোডিটিজ মন্ত্রী জুরাইদা বিনতি কামারুদ্দিন। তিনি ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, অনেক কর্মী গ্রামাঞ্চল থেকে আসেন, তারা শিক্ষিত নন এবং প্রায়ই দালাল, স্থানীয় নেতা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে প্রতারিত হন।  

তিনি বলেন, চাকরি পাওয়ার আশায় অনেকেই বাড়ি-জমি বিক্রি করেন বা বড় অঙ্কের ঋণ নেন। কিন্তু মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর দেখা যায়, প্রতিশ্রুত চাকরি প্রস্তুত নয় বা চাহিদার বাইরে কর্মী আনা হয়েছে। ফলে তারা কাজ, আয় ও সহায়তা ছাড়া অসহায় অবস্থায় পড়ে যান। সম্প্রতি প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ বাংলাদেশি কর্মীকে চাকরি না দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা তিনি অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।  

জুরাইদা জানান, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে দুই মিলিয়নের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। তারা প্ল্যান্টেশন, নির্মাণ, উৎপাদন, সেবা খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী নিজস্ব ব্যবসাও শুরু করেছেন, যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রয়োজন মেটাচ্ছে।  

তিনি আরো বলেন, যখন তিনি হাউজিং মন্ত্রী ছিলেন, তখন বিদেশি কর্মীদের জন্য উন্নত জীবনযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংস্কার উদ্যোগ নেন। আগে কোনো সঠিক নির্দেশনা ছিল না, ফলে কর্মীরা অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকতেন।  

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জেমস অ্যাঞ্জেলাস, প্রেসিডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিল জাপান; কারোরি সিং, এমেরিটাস ফেলো, সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ সেন্টার, রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুস্তাফা ওসমান তুরান, সাবেক তুর্কি রাষ্ট্রদূত। সেশনটি পরিচালনা করেন নেপালের অ্যাকাউন্টেবিলিটি ল্যাবের দক্ষিণ এশিয়া লিড নারায়ণ অধিকারী।  

সব মিলিয়ে আলোচনায় উঠে আসে, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তাদের অধিকার, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং কার্যকর সংস্কার জরুরি।