বাংলাদেশে মানব পাচার প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে নতুন খসড়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে মানব পাচার সিন্ডিকেটের সদস্যদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আইনটির মাধ্যমে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তি আরো কঠোর করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্য ডেইলি স্টার এ বিষয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, মানব পাচার সিন্ডিকেটে জড়িত কেউ ধরা পড়লে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এছাড়া মানব পাচার কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্তদের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আইনটি মানব পাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের ঘাটতি পূরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানব পাচার একটি আন্তর্জাতিক অপরাধে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়। এদের অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে অমানবিক পরিস্থিতিতে পড়েন। নতুন আইন কার্যকর হলে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
খসড়া আইনে ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসন ও সহায়তার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাচার হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরার পর তাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পাচার প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগও নেওয়া হবে।
মানব পাচার প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো ক্ষমতাবান করা হবে। তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাবও খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে মামলা নিষ্পত্তি দ্রুত হবে এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মৃত্যুদণ্ডের বিধান মানব পাচারকারীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা বহন করবে। তবে আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনিক দক্ষতা, আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। তারা বলেন, শুধু কঠোর শাস্তি নয়, বরং পাচার প্রতিরোধে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণগুলো মোকাবিলা করতে হবে।
খসড়া আইনটি শিগগিরই জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে এটি মানব পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠোর আইন হিসেবে কার্যকর হবে।
logo-1-1740906910.png)