বিদেশে কর্মী পাঠাতে সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম ওইপি চালু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম (ওইপি)। বিদেশগামী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন, ন্যায্য নিয়োগ এবং স্বচ্ছ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এই প্ল্যাটফর্মকে যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই জাতীয় ডিজিটাল গেটওয়ে অভিবাসন প্রক্রিয়ার সব অংশীদারকে একত্রে সংযুক্ত করবে। এর মধ্যে রয়েছে অভিবাসনে আগ্রহী কর্মী, রিক্রুটিং এজেন্সি, ব্যুরো অব ম্যান পাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি), টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।
ওইপি অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে দালালদের ভূমিকা কমিয়ে কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় হ্রাসে সহায়তা করবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই প্ল্যাটফর্ম অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন যুগের সূচনা করবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আগে অভিবাসীদের ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে সেবা নিতে টাকা দিতে হতো, যা নিয়ে অভিযোগ ছিল। নতুন প্ল্যাটফর্মে এসব সেবা বিনামূল্যে দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, “ওইপি ইতোমধ্যেই মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকা কমাতে এবং অভিবাসন ব্যয় হ্রাসে সহায়তা করছে। তবে এখনো অনেক দূর যেতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো ফাংশন যুক্ত করে শ্রমিক, নিয়োগকর্তা ও সরকারকে উপকৃত করা হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “ওইপি চালু করা কোনো প্রকল্পের শেষ নয়; বরং শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় এটি একটি নতুন অধ্যায়। আমরা এর বৈশিষ্ট্যগুলো বাড়াতে থাকব এবং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব।”
পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নিয়োগ ব্যবস্থা দ্বিপক্ষীয় শ্রম চুক্তি জোরদার করবে এবং বাংলাদেশ ও গন্তব্য দেশগুলোর মধ্যে আস্থা বাড়াবে। আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টিউনন বলেন, “ওইপি সুষ্ঠু নিয়োগ নীতিমালা বাস্তবায়নে একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। তথ্য ও প্রক্রিয়া কেন্দ্রীভূত করে এটি নিয়োগ সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে এবং কর্মীদের জন্য যাচাই করা তথ্যের অ্যাক্সেস উন্নত করবে।”
সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন দিপাক এলমার বলেন, “শুধু প্রযুক্তি দিয়ে অভিবাসন ব্যবস্থাপনা ঠিক হবে না। প্রতিষ্ঠান, নিয়োগকর্তা ও অভিবাসীরা কীভাবে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হন, তার ওপরই সাফল্য নির্ভর করবে।”
ওইপি চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি শুধু প্রযুক্তিগত সমাধান নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একটি নতুন কাঠামো। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই প্ল্যাটফর্ম অভিবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা, সুরক্ষা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিদেশে কাজের সুযোগ তৈরি করবে।
logo-1-1740906910.png)