Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

নেপাল হয়ে কানাডা বা ইউরোপ যাওয়ার প্রলোভনে মানব পাচার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৪৫

নেপাল হয়ে কানাডা বা ইউরোপ যাওয়ার প্রলোভনে মানব পাচার

বাংলাদেশ থেকে নেপাল হয়ে কানাডা, ইউরোপ কিংবা অন্যান্য দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে একটি মানব পাচার চক্র তরুণদের ফাঁদে ফেলছে। প্রবাসে পাঠানোর নামে নেপালে নিয়ে গিয়ে তাদের জিম্মি করে নির্যাতন চালিয়ে পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে এই চক্র। সম্প্রতি এমনভাবে প্রতারিত তিন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, সিলেট থেকে এক ব্যক্তি খবর দেন, তার ভাইসহ তিনজনকে কানাডায় পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে নেপালে নেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, কানাডায় পৌঁছানোর পরই সব খরচ পরিশোধ করতে হবে। ১৩ অক্টোবর তারা নেপালে পৌঁছালে একটি হোটেলে রেখে তাদের পাসপোর্ট ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হয়।

চক্রটি তাদের পাসপোর্টে কানাডার ভিসা ও টিকিট লাগিয়ে ছবি পাঠায় পরিবারের কাছে। পরে কানাডায় পৌঁছেছে দাবি করে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে যোগাযোগ করে প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা এবং পরে আরো ১২ লাখ টাকা দাবি করে। জিম্মিদের দিয়ে অস্ত্রের মুখে “আমরা কানাডায় পৌঁছেছি” বলে ভিডিও বার্তা পাঠানো হয়।

একজনের পরিবারের সন্দেহ হলে তারা স্থানীয় দালালের কাছে ঘটনা জানতে চান। দালালকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে পাচারকারীরা টালবাহানা শুরু করে এবং নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ২৬ অক্টোবর পরিবারগুলো ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারের আবেদন করে। এরপর ব্র্যাক সিআইডি ও নেপালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মানব পাচার আইনে মামলা হয় এবং সেদিন রাতেই স্থানীয় একজন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের খবর নেপালে পৌঁছালে পাচারকারীরা রাত ৩টার দিকে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের পাশে তিনজনকে ছেড়ে দেয়। ৩০ অক্টোবর তারা ঢাকায় ফিরলে ব্র্যাকের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম তাদের সহায়তা করে এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জবানবন্দি নেন।

ব্র্যাক জানিয়েছে, শুধু কানাডা নয়, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে একইভাবে নেপালে আটকে রেখে নির্যাতন করে অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটছে। নেপালে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সহজলভ্য হওয়ায় পাচারকারীরা প্রথমে সেখানেই নিয়ে যায়। বিশেষ করে “পৌঁছানোর পর টাকা পরিশোধ”- এই প্রলোভনে অনেকেই ফাঁদে পড়ছেন।

ব্র্যাকের পক্ষ থেকে বিদেশগামীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। কোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতি হলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে এবং বিপদে পড়লে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা ও পুনর্বাসনে কাজ করছে।

Logo