
বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০২৫ উদযাপিত হয়েছে ‘টেকসই উন্নয়নে পর্যটন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ভিসা জটিলতা, ইমিগ্রেশন বাধা এবং নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উদ্বেগের কারণে অনেক দেশেই ভ্রমণ সীমিত হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান ও কাতারে ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসাও আগস্ট ২০২৪ থেকে স্থগিত। ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ায় কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে। চীনে ভিসা পাওয়া গেলেও বিমানবন্দরে যাচাই-বাছাইয়ে অনেক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। থাইল্যান্ডে ভিসা মিলছে, তবে সময় বেশি লাগছে। মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন সন্দেহ হলে পর্যটকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
সবুজ পাসপোর্টধারীরা বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনার শুরুতেই সমস্যায় পড়ছেন। অনেকে ভিসা আবেদন করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ছেন, আবার কেউ কেউ ভিসা পেয়েও বিমানবন্দরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।
দেশের অভ্যন্তরেও পর্যটন খাতে সমস্যা কম নয়। কক্সবাজার, বান্দরবান, সিলেটসহ জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে হোটেল-রিসোর্টের ভাড়া অনেক সময় বিদেশের তুলনায় বেশি। মৌসুমে রুম পাওয়া কঠিন, খাবারের দামও তুলনামূলক বেশি। নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। কক্সবাজার সৈকতে বারবার ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, প্যারাসেইলিংসহ কিছু বিনোদন কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। নারী পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (টোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান বলেন, “ভ্রমণ খাতের সমস্যা সমাধানে সরকারের রেগুলেটরি নজরদারি জরুরি। বিদেশে ভিসা সংকট নিরসনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন।”
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য বিশ্বভ্রমণের স্বপ্ন এখন ভিসা জটিলতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে ক্রমেই ফিকে হয়ে যাচ্ছে। পর্যটনবান্ধব নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া এই সংকট কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ