Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

অবৈধ অভিবাসনের ভয়াল ফাঁদে বাংলাদেশিরা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:৫২

অবৈধ অভিবাসনের ভয়াল ফাঁদে বাংলাদেশিরা

অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। দেশি-বিদেশি দালালচক্রের প্রলোভনে পড়ে হাজারো মানুষ মরুভূমি, সাগর ও সীমান্ত পেরিয়ে ইউরোপে পৌঁছাতে গিয়ে বন্দিত্ব, নির্যাতন ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট সমাধানে এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়, প্রয়োজন সম্মিলিত আন্তর্জাতিক নজরদারি।

ফ্রন্টেক্সের তথ্য অনুযায়ী, লেবানন হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় বাংলাদেশিরা শীর্ষে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি এই রুটে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। লিবিয়া ফেরত ৫৫৭ জনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ শতাংশের পরিবারকে স্থানীয় দালালরা অল্প খরচে বেশি বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যায়। তাদের ৯৩ শতাংশ ক্যাম্পে বন্দি হয়ে ৭৯ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।

এই পাচার প্রক্রিয়ায় লেবাননে বন্দি রেখে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। কেউ কেউ দালালদের দিয়েছেন ৭০ লাখ টাকা, কেউ সাড়ে ১০ লাখ টাকা। তবুও রক্ষা হয়নি; অনেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, কেউ সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন।

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১৮৭ জন বাংলাদেশিকে আমেরিকা থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত ২ আগস্ট মার্কিন সি-১৭ সামরিক বিমানে ৩৯ জন বাংলাদেশিকে বিতাড়িত করা হয়, যার মধ্যে একজন নারীও ছিলেন। গত দেড় বছরে আমেরিকা, লিবিয়া ও ইউরোপ থেকে শত শত বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানব পাচার শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয়, পশ্চিমা বিশ্বের কিছু নাগরিকও এই চক্রে জড়িত। অতীতে মরুভূমি ও সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানোর গল্প থাকলেও এখন সীমান্তরক্ষীরা অনেক বেশি সতর্ক। ফলে অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ কমে গেছে।

এই বাস্তবতায়, দালালদের প্রলোভনে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের পথে না গিয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়াই হবে নিরাপদ ভবিষ্যতের পথ।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Logo