মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে সহসাই মিলছে না আশার আলো

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৯

বাংলাদেশের শ্রমবাজার এখনও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মালয়েশিয়া, ওমান ও বাহরাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে প্রবেশে বাধাগ্রস্ত। দীর্ঘদিন ধরে এসব দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রবেশ সীমিত বা বন্ধ রয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার প্রবাসী কর্মী অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
ইউএই বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার, যা ২০১৩ সাল থেকে কার্যত বন্ধ। যদিও ২০২১ সালে কিছুটা গতি আসে, ২০২২ সালে ১ লাখ ১ হাজার এবং ২০২৩ সালে ৯৮ হাজার কর্মী যেতে পারলেও ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৪৭ হাজারে। গত জুলাইয়ে দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করায় ইউএই সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা সীমিত করে দেয়। বাংলাদেশি কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন নিশ্চিত করেছেন, ২২ জুলাই ২০২৪ থেকে ভিসা আবেদন সীমিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি একটি ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, ২০২৬ সালে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশের নাগরিকদের ইউএই ভিসা দেওয়া হবে না। যদিও বাংলাদেশ দূতাবাস এই তথ্যকে অস্বীকার করেছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত এক বছরে কোনো ভিসা ইস্যু না হওয়াই প্রমাণ করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।
মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ২০২১ সালে বাজার খুললেও আগস্ট ২০২২ থেকে এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৪.৫ লাখ কর্মী গেলেও এরপর নতুন নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তব অগ্রগতি নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত নিয়োগ, ভিসা বাণিজ্য, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতারণার কারণে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকটে পড়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ফিলিপাইন ও নেপালের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো বাংলাদেশের জায়গা দখল করে নিতে পারে। এতে রেমিট্যান্স প্রবাহেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
একজন অপেক্ষমাণ কর্মী বলেন, “১৩ মাস আগে পাসপোর্ট জমা দিয়েছি, এখনো ভিসা হয়নি। আন্দোলনের পর থেকে সব বন্ধ।”
এই বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান পুনরুদ্ধারে স্বচ্ছতা, কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজন। না হলে লাখো কর্মীর স্বপ্ন থমকে যাবে সীমান্তেই।
তথ্যসূত্র: দ্য ডেইলি স্টার