সৌদি আরবে দক্ষতার ভিত্তিতে ওয়ার্ক পারমিটের ক্যাটাগরি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮

সৌদি আরবের শ্রমবাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে দেশটি ঐতিহ্যবাহী ইকামাভিত্তিক ব্যবস্থার পরিবর্তে দক্ষতাভিত্তিক নতুন ওয়ার্ক পারমিট ক্যাটাগরি চালু করেছে। এই নতুন নীতিমালার আওতায় বিদেশি কর্মীদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। যথা হাই-স্কিল, স্কিলড এবং বেসিক।
এই শ্রেণিবিন্যাস নির্ধারণ করা হচ্ছে কর্মীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, মাসিক বেতন এবং বয়সের ভিত্তিতে। পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হচ্ছে সৌদি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘Qiwa’-এর মাধ্যমে।
নতুন এই ব্যবস্থার প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে ৫ জুলাই ২০২৫ থেকে, যা সৌদি আরবে বর্তমানে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য। দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে ৩ আগস্ট থেকে, যা নতুনভাবে সৌদি আরবে প্রবেশকারী কর্মীদের জন্য কার্যকর।
হাই-স্কিল শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইটি বিশেষজ্ঞ ও নির্বাহী পর্যায়ের কর্মীরা, যাদের স্নাতক বা তার বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে এবং কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা আছে।
স্কিলড শ্রেণিতে থাকছেন টেকনিশিয়ান, সুপারভাইজার ও কারিগর, যাদের মাধ্যমিক বা ভোকেশনাল সনদ রয়েছে এবং দুই বছরের অভিজ্ঞতা আছে।
বেসিক শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন সাধারণ শ্রমিক ও এন্ট্রি-লেভেল কর্মীরা, যাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও বয়স ৬০ বছরের নিচে এবং মাসিক বেতন নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে।
প্রতিটি শ্রেণির জন্য পেশাগত স্বীকৃতি বা অ্যাক্রেডিটেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি কোনো কর্মীর শ্রেণিবিন্যাস ভুলভাবে নির্ধারিত হয়, তবে নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সংশোধনের আবেদন করা যাবে।
এই নতুন ব্যবস্থায় নিয়োগদাতাদের জন্যও কিছু নির্দেশনা রয়েছে। চাকরির প্রস্তাব অবশ্যই কর্মীর যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, বেতন ও দায়িত্ব শ্রেণিবিন্যাসের মানদণ্ড পূরণ করতে হবে এবং কর্মীকে সঠিক পেশাগত শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
এই নীতিমালা সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’-এর অংশ, যার লক্ষ্য শ্রমবাজারে দক্ষতা বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক প্রতিভা আকর্ষণ এবং কর্মসংস্থানের মান উন্নয়ন। এর মাধ্যমে দেশটি একটি যোগ্যতাভিত্তিক, স্বচ্ছ ও আধুনিক শ্রমব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন বিদেশি কর্মীদের জন্য যেমন সুযোগ সৃষ্টি করবে, তেমনি নিয়োগদাতাদের জন্যও নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ ও কার্যকর করবে। সৌদি আরবে কাজ করতে আগ্রহী প্রবাসীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত পরিবর্তন, যা ভবিষ্যতের কর্মজীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া