
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ডাকযোগে ভোট (পোস্টাল ব্যালট) চালুর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সম্ভাব্য ব্যয় সত্ত্বেও এই পদ্ধতিতে কতটা ভোটার সাড়া দেবেন, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ‘পোস্টাল ব্যালট বিডি’ নামে একটি অ্যাপ তৈরিসহ পদ্ধতি উন্নয়নে অর্ধ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিদেশে ব্যালট পাঠানো, ফেরত আনা, এনআইডি সেবা চালু, প্রশিক্ষণ ও কর্মকর্তাদের সফর ব্যয় মিলিয়ে খরচের প্রাক্কলন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ডাক বিভাগের হিসাবে, একজন ভোটারের ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনতে গড়ে ৫০০ টাকা লাগবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে অতিরিক্ত ১০০-২০০ টাকা। ফলে প্রতি এক লাখ ভোটারের জন্য ব্যয় দাঁড়াবে ৬-৭ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে ১০টি দেশের ১৭টি মিশনে অর্ধ লাখ আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৩০ হাজারের মতো নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে, আর ভোটার হয়েছেন প্রায় ১৮ হাজার। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ৮-১০ লাখ প্রবাসী ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ব্যয় নির্ভর করবে কতজন ভোটার নিবন্ধন করবেন এবং ডাক বিভাগ কত খরচের প্রস্তাব দেবে তার ওপর।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, “ডাকযোগে ভোট নিতে যে খরচ, সেই তুলনায় ভোটদানের হার বেশির ভাগ দেশেই খুব কম। গড় টার্নআউট ৩ শতাংশের বেশি নয়। তারপরও দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অবদান বিবেচনায় তাদের ভোটের সুযোগ দেওয়া জরুরি”।
তিনি আরো বলেন, “সচেতনতা ছাড়া প্রবাসী ভোটিং সম্ভব নয়। ভোটার অ্যান্ড সিভিক এডুকেশন ছাড়া পুরো প্রক্রিয়া কার্যকর হবে না। বিদেশ সফরকে ‘ভ্রমণ বিলাস’ ভাবার সুযোগ নেই, বরং এটি একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।"
ইসি জানিয়েছে, আরপিওতে প্রবাসী ভোটিং পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে এবং শিগগিরই গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যয় ও বাস্তবতার ভারসাম্য না থাকলে এই উদ্যোগ কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর