
জাপানে জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জাপান সেল। কর্মীদের ভাষাগত দক্ষতা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একাধিক প্রতিষ্ঠান ও দূতাবাসের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ‘জাপান ডেস্ক’।
গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়, জাপান সেলের কার্যক্রম প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে, যাতে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
জাপানকে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশটিতে ১ কোটি ১০ লাখ কর্মীর ঘাটতি হতে পারে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশ এনবিসিসি, জেবিবিআরএ এবং কেডিএসের সঙ্গে চুক্তি করে প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ কার্যক্রম চালু করেছে।
জাপান ডেস্কের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে শ্রমবাজার বিশ্লেষণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ চিহ্নিতকরণ, ভাষা প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল টেস্ট, তথ্য সংগ্রহ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়। কিউসিএস-১৭ কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী পাঠাতে এসএসডব্লিউ ক্যাটাগরিতে নিয়োগের জন্য এনবিসিসি ও জেবিবিআরএ যৌথভাবে কাজ করছে। কেডিএস নার্সিং সেবা ও ভাষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মডেল ক্যাম্পাস গড়ে তুলছে।
জাপান সেলের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ চালু হয়েছে, যেখানে কর্মসংস্থান, ভাষা দক্ষতা, ভিসা ও বেতন সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগের জন্য info.japancell@probashi.gov.bd ই-মেইল চালু করা হয়েছে।
জাপানি ভাষা শিক্ষায় সহায়তা দিতে ওটিআইটি ও জাপান ফাউন্ডেশনের দুটি অ্যাপস আপলোড করা হয়েছে। ভাষা শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানিজ লোনের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ভাষা পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, নর্থ সাউথ, আইইউবি, বিকেটিটিসি, বিজিটিটিসি ও এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৪ আগস্ট থেকে অনলাইন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মান উন্নয়নে এনএসডিএ অনুমোদন দিয়েছে। জেএলপিটি ও জেএফটি পরীক্ষার্থীদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে জেইউএএবি, জাপানি ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউশন ও বিএসএসএ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রশিক্ষকদের মাসিক ভাতা চালু হয়েছে।
ভিএফএসের সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং ১ লাখ বাংলাদেশিকে জাপানি ভাষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে এসএসডব্লিউর ১৬টি সেক্টরের মধ্যে ৬টিতে নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। ২০২৭ সাল থেকে টিআইটিপির পরিবর্তে ইএসডি কর্মসূচি চালু হবে।
জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণে ৩৬টি কলেজে এন৫ এবং ১৬টিতে এন৪ কোর্স চলছে। জাপান ফাউন্ডেশন একজন প্রশিক্ষক পাঠাবে। ICT প্রশিক্ষণ ও LMS তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
আগামী ৪ ও ৭ নভেম্বর টোকিও ও নাগোইয়ায় নিয়োগ সংযোগ অনুষ্ঠান হবে, যা বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন দ্বার খুলবে।
তথ্যসূত্র: সময় অনলাইন