দুই দশকের পরিত্যক্ত ভবনে তড়িঘড়ি করে হচ্ছে প্রবাসী হাসপাতাল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫

রাজধানীর গুলশানে দুই দশক ধরে ফেলে রাখা অবকাঠামোয় প্রবাসীদের জন্য ২০ শয্যার একটি জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। অথচ মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সেখানে ৩০০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের কথা ছিল।
বোর্ডের পরিচালনা পরিষদ ইতোমধ্যে ৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে, যা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি হয়েছে কোনো বিশেষজ্ঞ কমিটি ছাড়াই, শুধু বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা দিয়ে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে ৩০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ করতে গেলে এই ২০ শয্যার হাসপাতালের বিনিয়োগ পুরোপুরি অপচয় হয়ে যেতে পারে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়া এ ধরনের আংশিক প্রকল্প বাস্তবায়ন অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।”
মূল মাস্টারপ্ল্যানে দুটি ১৫ তলা হাসপাতাল ভবন, একটি ১০ তলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আবাসিক ভবন ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বর্তমানে পরিত্যক্ত দুটি ভবনের আংশিক ফ্রেম স্ট্রাকচারে ২০ শয্যার হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে থাকবে প্যাথলজি, কনসালটেশন সেন্টার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ফার্মেসি।
প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর, যদিও মূল মাস্টারপ্ল্যানের ৩০০ শয্যার হাসপাতাল তিন বছরে বাস্তবায়নযোগ্য বলে জানিয়েছে কনসাল্টিং ফার্ম। প্রবাসীদের জন্য ৫০% ছাড়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান প্রকল্পে তা স্পষ্ট নয়।
প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া জানান, “এটি মূলত বসানোর উদ্যোগ। ভবিষ্যতে এখান থেকেই ৩০০ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়ন করা হবে।” তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন করা হবে, যেখানে ৫১% শেয়ার থাকবে বোর্ডের এবং ৪৯% শেয়ার প্রবাসীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
সরকারি পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা জমি ও অবকাঠামো কাজে লাগানোর উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক বণিক বার্তা