কারিগরি শিক্ষায় আসন ফাঁকা, দক্ষ শ্রমবাজার কীভাবে হবে?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:০০

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের অনাগ্রহ ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। ২০২৪ সালে ৬৪টি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে (টিএসসি) নবম শ্রেণিতে ২০ হাজারের বেশি আসনের বিপরীতে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৮ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ প্রায় ৬০% আসন ফাঁকা রয়ে গেছে। অথচ দেশের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তরুণদের মধ্যে কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কমার ফলে ভবিষ্যতে দক্ষ শ্রমিকের সংকট আরো তীব্র হবে। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থানও দুর্বল হয়ে পড়বে। বর্তমানে দেশে প্রায় ২ কোটি তরুণ রয়েছে, যাদের বড় অংশই কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুত নয়। অথচ প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বিদেশে পাঠানো হচ্ছে, যাদের অধিকাংশই অদক্ষ।
জাতীয় পর্যায়ে দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারে নানা উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরার কার্যকর প্রচারণা নেই। অনেক অভিভাবক এখনো মনে করেন, সাধারণ শিক্ষাই ভালো ভবিষ্যতের পথ। ফলে শিক্ষার্থীরা টিএসসি বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বদলে সাধারণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়কেই বেছে নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষ শ্রমবাজার গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষাকে মূলধারায় আনতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন-
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো
- কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়ন
- শিল্প খাতে সরাসরি সংযোগ
- প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির নিশ্চয়তা
বর্তমানে দেশে প্রায় ৫ হাজারের বেশি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। ফলে শিক্ষার মান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অপরিহার্য। বাংলাদেশ যদি এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চলে, তাহলে শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। তাই এখনই সময়, কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে যুবসমাজকে দক্ষ করে গড়ে তোলার। নইলে “আসন ফাঁকা” থেকে যাবে শুধু শ্রেণিকক্ষে নয়, শ্রমবাজারেও।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট