মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে চাকরির নতুন দিগন্ত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৮

বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার এক সম্ভাবনাময় গন্তব্য হয়ে উঠছে। তবে এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সময়োপযোগী প্রস্তুতি ও দক্ষতা অর্জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য স্পোকেন আরবি, কারিগরি দক্ষতা ও পেশাগত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা গেলে তারা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে বিশেষ সুবিধা পেতে পারে।
দেশে প্রায় ২০ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি যদি তাদের আরবি ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তাহলে তারা সহজেই সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমানসহ বিভিন্ন আরব দেশে কাজের সুযোগ পাবে। কারণ এসব দেশে আরবি ভাষা দক্ষতা শ্রমিক নিয়োগে একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলোতে যদি স্পোকেন আরবি, কম্পিউটার স্কিল, হসপিটালিটি, ইলেকট্রিক ও প্লাম্বিংয়ের মতো কোর্স চালু করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা শুধু ধর্মীয় জ্ঞানেই নয়, বাস্তব জীবনের কর্মক্ষেত্রেও দক্ষ হয়ে উঠবে। এতে করে তারা বিদেশে গিয়ে শুধু শ্রমিক নয়, দক্ষ কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু তাদের বড় অংশই অদক্ষ, ফলে কম মজুরি ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হতে হয়। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের যদি দক্ষতা ও ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তাহলে তারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে।
বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যে মাদ্রাসাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। যেমন, Spoken Arabic for Employment নামে একটি প্রকল্পের আওতায় কিছু মাদ্রাসায় আরবি ভাষা শেখানো হচ্ছে। তবে এই উদ্যোগ এখনো সীমিত পরিসরে চলছে। জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তা ছাড়া এই উদ্যোগের বিস্তার সম্ভব নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের শুধু ধর্মীয় জ্ঞান নয়, জীবিকার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দিতে হবে। স্পোকেন আরবি শেখা হলে তারা মধ্যপ্রাচ্যে সহজেই কাজ পাবে, সম্মানজনক জীবন গড়তে পারবে।”
সরকার যদি মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করে, তাহলে শুধু শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নয়, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়বে। তাই এখনই সময় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য স্পোকেন আরবি ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট