বাংলাদেশ হালাল পণ্যের আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার সম্ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৪

বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্য বাজারের আকার ২০২৫ সালে দাঁড়াবে ৩.৩০ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০৩৪ সালের মধ্যে ৯.৪৫ ট্রিলিয়নে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে বাংলাদেশ তার জনসংখ্যা, ধর্মীয় ও ভৌগোলিক সুবিধার কারণে আঞ্চলিক নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটির চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন সম্প্রতি এক সেমিনারে বলেন, “সরকার হালাল অর্থনীতির জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বাংলাদেশের কৃষি, মৎস্য ও তৈরি পোশাক খাত ইতোমধ্যে হালাল সনদপ্রাপ্ত হতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও অন্যান্য বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে। ২০০৭ সাল থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রায় ২৩৫টি কোম্পানিকে হালাল সনদ দিয়েছে, যার মধ্যে ১০০টির বেশি খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে নিয়োজিত। ৬৬টি কোম্পানি ৬০০টির বেশি পণ্য রপ্তানি করেছে।
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ঢাকায় আন্তর্জাতিক মানের স্লটারহাউসের অভাব, জটিল সনদপ্রক্রিয়া এবং জনসচেতনতার ঘাটতি বড় বাধা। আইইউবিএটির সহকারী অধ্যাপক ড. মোমিনুল ইসলাম বলেন, “একক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সনদপ্রদানকারী সংস্থা না থাকায় বিদেশি বাজারে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়।”
মানবসম্পদের অভাবও একটি বড় সমস্যা। হালাল পণ্য খাতে ইসলাম ও ব্যবসার সমন্বয় জানা দক্ষ জনবল প্রয়োজন, যা দেশে সীমিত। তিনি আরো বলেন, “অনেকেই জানেন না কোন পণ্য হালাল। কোম্পানির দায়িত্ব জানানো, আর ভোক্তার অধিকার জানার।”
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার সঙ্গে হালাল পণ্য রপ্তানি শুরু করেছে। মালয়েশিয়া হালাল সনদে বিশ্বনেতা হিসেবে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। বিএমসিসিআই সভাপতি শাব্বির এ খান আশা প্রকাশ করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ৭-৮ বিলিয়ন ডলারের হালাল পণ্য রপ্তানি সম্ভব।
সরকারের সমন্বিত নীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক মানের সনদপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশ হালাল অর্থনীতিতে আঞ্চলিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড