
সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নোয়াখালীর হাজারো প্রবাসী শ্রমিক প্রতিদিন গড়ে তুলছেন জীবনের নতুন অধ্যায়। আল কাসিম, রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মামসহ নানা অঞ্চলে কাজ করছেন তারা; কেউ নির্মাণ সাইটে, কেউ দোকানে, কেউবা রেস্টুরেন্টে। তাদের জীবনের গল্পে আছে কঠোর পরিশ্রম, সীমাহীন ত্যাগ, আবার আছে ছোট ছোট সাফল্যের আনন্দ।
সম্প্রতি টিকটকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আল কাসিমে কর্মরত এক নোয়াখালীর যুবক মাত্র ২০০ রিয়াল আয় দিয়ে কীভাবে নিজের জীবন চালাচ্ছেন, তা তুলে ধরেছেন। ভিডিওতে তার সরল জীবন, সীমিত খরচ এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
নোয়াখালীর প্রবাসীরা সাধারণত অল্প শিক্ষিত হলেও পরিশ্রমী। তারা সৌদি আরবের শ্রমবাজারে একটি নির্ভরযোগ্য কর্মশক্তি হিসেবে পরিচিত। হাইপার সজিব নামে একজন প্রবাসী বলেন, “নিজ দেশের মতো শান্তি এখানে নেই, কিন্তু রুজির জন্য এই জীবন বেছে নিতে হয়েছে”।
তবে শুধু কষ্ট নয়, সৌদি আরবে নোয়াখালীর মানুষের মধ্যে অনেকেই সফল হয়েছেন। কেউ ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন, কেউবা স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বদলে যাচ্ছে নোয়াখালীর গ্রামাঞ্চল; নতুন ঘর, শিক্ষায় বিনিয়োগ এবং সামাজিক উন্নয়ন।
তবুও এই জীবন সহজ নয়। দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তাদের প্রতিদিনের সঙ্গী। একজন প্রবাসী বলেন, “আমরা এখানে শুধু শ্রমিক নই, আমরা স্বপ্নের ফেরিওয়ালা।”
এই গল্পগুলো শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতির ও সমাজের গভীর বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। সৌদি আরবে নোয়াখালীর মানুষের জীবন তাই একদিকে সংগ্রামের, অন্যদিকে সম্ভাবনার।
মাইগ্রেশন কনসার্ন রিপোর্ট