বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এখন আর শুধু ইউরোপ–আমেরিকানির্ভর নয়; মধ্যপ্রাচ্যের বাজার, বিশেষ করে সৌদি আরব হয়ে উঠছে নতুন সম্ভাবনার কেন্দ্র। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সৌদি আরবে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৫২ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৩ শতাংশ বেশি। এই প্রবৃদ্ধি শুধু সংখ্যার নয়, বরং বাংলাদেশি পোশাকের প্রতি সৌদি ক্রেতাদের আস্থার প্রতিফলন।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত, যা দেশের মোট বৈদেশিক আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি। সৌদি বাজারে মূলত টি-শার্ট, জিন্স ও নিত্যব্যবহার্য পোশাক বেশি রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আখতার হোসেন অপূর্ব বলেন, “আমরা সৌদি আরব ও ইউএইকে কেন্দ্র করে জিসিসি অঞ্চলে রপ্তানি বাড়ানোর বড় সম্ভাবনা দেখছি।”
এই রপ্তানি শুধু সরাসরি নয়, সৌদি আরবে ইউরোপীয় ব্র্যান্ডের আউটলেটগুলো বাংলাদেশি প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সরাসরি সৌদি বন্দরে পাঠায়। অপূর্ব বলেন, “আমরা হোলসেল ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করি, পরে তারা সেগুলো রিটেইল আউটলেটে বিক্রি করে। বেশির ভাগ সৌদি নাগরিকই এখন বাংলাদেশি পোশাক কিনছেন।”
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এই বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি ছিল ৮৪ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২২-২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১৩০ মিলিয়ন ডলারে। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসীর একটি স্থায়ী বাজার বলে মনে করেন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মোহিউদ্দিন রুবেল।
তিনি বলেন, “সৌদি নাগরিকরাও আমাদের ক্রেতা। তারা ভালো পোশাক পছন্দ করেন এবং তা কিনতে সক্ষম। বাংলাদেশ বিশ্বমানের পোশাক তৈরি করে, যা ইউরোপীয় ও আমেরিকান ব্র্যান্ডের মাধ্যমে সৌদি বাজারে পৌঁছায়।”
রুবেল মনে করেন, উচ্চমানের পোশাক ও স্থানীয় ব্র্যান্ড সৌদি বাজারে প্রবেশের বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে। “আমাদের এখনই মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সৌদি আরবে রপ্তানি বাড়াতে হবে। ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমানো সময়ের দাবি।”
এই প্রবণতা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে বহুমুখী বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
তথ্যসূত্র: আরব নিউজ
logo-1-1740906910.png)