প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স ছাড়াতে যাচ্ছে ৩০ বিলিয়ন ডলার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৮:১৪

এতদিন দেশে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড ছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি বা ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাস-সৃষ্ট দুর্যোগের সময় প্রবাসীরা এ পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছিলেন। তবে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯ দিন বাকি থাকতেই দেশে ২৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাকি ৯ দিনে আসা রেমিট্যান্স যুক্ত হলে এর পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, চলতি জুনের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসীরা ১৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২৪ সালের জুনের একই সময়ে ১৯১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সে হিসাবে চলতি জুনে রেমিট্যান্সে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘গত বছরের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ২১ জুন পর্যন্ত দেশে রেকর্ড ২৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান তথা গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লম্ফন শুরু হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিরা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় গত কয়েক মাসে বৈধপথে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ কারণে আগের বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে ৬ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। রেমিট্যান্সের এ উচ্চ প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও স্থিতিশীলতা ফিরেছে। ডলার সংকটের কারণে ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে দেশে রিজার্ভের ক্ষয় শুরু হয়। ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হওয়া রিজার্ভ দুই বছরের মধ্যে অর্ধেকে নেমে আসে। তবে চলতি অর্থবছরে রিজার্ভ না কমে বাড়তে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ১৯ জুন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) দেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ওই দিন গ্রস রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশের জন্য প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকেও ঋণের কিস্তি বাবদ ১৩০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। এসব ঋণ সহায়তা যুক্ত হলে দেশের রিজার্ভ ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে আসে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা বেড়ে ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হওয়ার নয়দিন আগেই দেশে ২৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এল।
তথ্যসূত্র: দৈনিক বণিক বার্তা